৫ দাবিতে আন্দোলনে অনড় বুয়েট শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। ষষ্ঠ দিনের আন্দোলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে তারা।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বুয়েট শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে :
১. আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে এখনই সাময়িক বহিষ্কার করতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হবে, তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে মর্মে বুয়েট প্রশাসন থেকে নোটিস জারি করতে হবে।
২. আবরার হত্যা মামলার সব খরচ বুয়েট প্রশাসন বহন করবে এবং তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে, সেটাও নোটিসে লেখা থাকবে।
৩. বুয়েটে সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে সব হল থেকে অবৈধ ছাত্র উৎখাত করতে হবে। অবৈধভাবে হলের সিট দখলকারীদের উৎখাত করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্র সংগঠনগুলোর অফিস রুম সিলগালা করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পর ভবিষ্যতে কেউ যদি এ রকম সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়িত থাকে, কিংবা কোনো রকম ছাত্র নির্যাতনে জড়িত থাকে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেবে— তা বিস্তারিত জানিয়ে নোটিস জারি করতে হবে। পরবর্তী সময়ে এটি যে অর্ডিন্যান্সে অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তা নোটিসে উল্লেখ থাকতে হবে। পাশাপাশি, এ ধরনের কার্যক্রম তদারকির জন্য একটি কমিটি করতে হবে এবং কমিটি গঠনের বিষয়টিও নোটিসে উল্লেখ করতে হবে।
৪. বুয়েটে আগে ঘটে যাওয়া সব ছাত্র নির্যাতন, হয়রানি, র্যাগিংয়ের ঘটনা এবং ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা প্রকাশের জন্য বিআইআইএস অ্যাকাউন্টে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম থাকতে হবে। বিষয়টি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শাস্তি বিধানের জন্য একটি কমিটি থাকতে হবে। বিষয়টি নোটিসের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
৫. প্রত্যেক হলের সব ফ্লোরের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা যুক্ত করতে হবে এবং এই সিসিটিভি ফুটেজ সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে— এই মর্মে নোটিস আসতে হবে।
এই পাঁচ শর্ত তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা চাই না, ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বুয়েটে ১৯ ব্যাচের যে শিক্ষার্থীরা আসবে, তারা একটি অসুস্থ একাডেমিক কালচারের অংশ হোক।’
এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘খুনিদের ঠিকানা- এই বুয়েটে হবে না’, ‘অত্যাচারীর ঠিকানা- এই বুয়েটে হবে না’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা- এই বুয়েটে হবে না’, ‘ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই, খুনিদের ফাঁসি চাই’, ‘আর কোনো আবরার- হারাতে চাই না বারবার’, ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসাথে চলে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। একই সঙ্গে আন্দোলন বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সচল রাখার জন্য আহ্বান জানান তিনি।