ছিনতাইয়ের অভিযোগে বহিরাগতকে পুলিশে দিল রাবি ছাত্রলীগ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/10/24/photo-1571889038.jpg)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষার্থীর মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগে এক বহিরাগত যুবককে মারধর করে পুলিশে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্নুজান হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। যুবককে আহত অবস্থায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বহিরাগত যুবক ফয়সাল উদ্দীন রাহাতের বাড়ি নগরীর মেহেরচণ্ডী পূর্বপাড়ায়। তিনি নিজেকে বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করেন। তবে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ বলছে, ফয়সাল ছাত্রলীগের কেউ নয়।
ছিনতাইয়ের শিকার মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল কাজী জানান, তিনি তৃতীয় বিজ্ঞান ও রবীন্দ্র ভবনের মাঝের রাস্তা দিয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে টুকিটাকির দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন থেকে দ্রুতগতিতে একটি মোটরসাইকেল আসে। এতে থাকা দুই যুবকের মধ্যে পেছনের জন থাবা দিয়ে তাঁর হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ছিনতাইচেষ্টায় ব্যর্থ হলেও তার হাত থেকে মোবাইলটি পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। এ সময় তারা মোটরসাইকেল নিয়ে লাইব্রেরির রাস্তা হয়ে প্যারিস রোডের দিকে চলে যায়।’
রুবেল কাজী আরো বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তাঁর বন্ধু ও ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌস মো. শ্রাবণকে জানান। ছিনতাইকারীরা প্যারিস রোড ঘুরে এসে মুন্নুজান হলের সামনের অবস্থান করছিল। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে একজন পালিয়ে যায়। পরে অন্যজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।’
রাবি ছাত্রলীগের মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস মো. শ্রাবণ বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর আমরা চারদিক ছড়িয়ে পড়ি। তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি খুবই উচ্চ শব্দসম্পন্ন ছিল, তাই সেটাকে শনাক্ত করতে সুবিধা হয়েছে। পরে আমরা সেখানে গিয়ে তাকে আটক করি। এ সময় ছিনতাইকারীরা উদ্ধতপূর্ণ আচরণ করে আমাদের মারতে আসলে ঘটনাস্থলে সে মারধরের শিকার হয়।’
তবে ছিনতাইয়ের কথা অস্বীকার করে মারধরের শিকার ফয়সাল উদ্দীন রাহাত বলেন, “ক্যাম্পাসে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। আমি মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আমার মোটরসাইকেলের চাবি খুলে নেয়। চাবি খুলে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ‘ছিনতাইকারীর সঙ্গে কিসের কথা’ এই কথা বলে তারা আমাকে মারধর করতে শুরু করে। আমি কোনোভাবেই ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত নই।”
জানতে চাইলে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রুহুল আমিন সরকার প্রিন্স বলেন, ‘ফয়সালকে চিনি। সে আমার এলাকার। তবে সে আমাদের ছাত্রলীগ কর্মী নয়। নিজেকে বাঁচাতে হয়তো সে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে এক বহিরাগতকে ধরা হয়েছে এমন তথ্য মতিহার থানা পুলিশকে দিয়েছি। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে গেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে উপস্থিত মতিহার থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘আহত যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে।’