কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে কেন সীমারেখা থাকা প্রয়োজন?
আপনি ভালো থাকলেই ভালো কাজ করতে পারবেন। সেটা গবেষণা কিংবা অন্য যেকোনো কাজ। নিজেকে ভালো রাখার বেশিরভাগ দায়িত্বটাই নিজের। তবে কর্মরত ব্যক্তিদের ভালো থাকা নেপথ্যে প্রতিষ্ঠানেরও একইভাবে দায়িত্ব বর্তায়। তাই সরকারি গবেষণাকেন্দ্রগুলোতে বর্তমানে গবেষকদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তবে, সেটা কিছু নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। গবেষণার কাজের প্রভাব ব্যক্তিগত পরিসরে যাতে না পড়ে, সেই বিষয়টিও একটু আলোচনা করা প্রয়োজন। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের
ব্যক্তিগত জীবন এবং কাজের জগৎটা আলাদা রাখা প্রয়োজন। একটা অদৃশ্য দেওয়াল, একটা সীমানা থাকলে কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার চাহিদা থাকবে। তাই গবেষণা এবং ব্যক্তিগত কাজের জন্য সময় আলাদা করে রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে সকালে গবেষণা সংক্রান্ত কাজ শুরু করার আগে জেনে নিন কতক্ষণ সময় সেখানে দিতে হবে। যদি এক সপ্তাহ জুড়ে এমন কাজ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে পাঁচ দিনই সংস্থা খোলা থাকছে কিনা জেনে নিতে হবে। কারণ সরকারি সংস্থায় নির্দিষ্ট কিছু দিনে ছুটি থাকে। তাই কাজটি গুরুত্বপূর্ণ হলে ছুটির দিন হলেও সেরে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে ছুটি থাকলে সেই নির্দিষ্ট দিনে সংস্থার মূল ফটক খোলা থাকবে কি না, বা গবেষণাগারের চাবি পাওয়া যাবে কি না- এই বিষয়গুলো জেনে সেই অনুযায়ী কাজের পরিকল্পনা করাই ভাল।
চাবি নেওয়ার বিষয়ে সংস্থার বেশ কিছু নিয়মাবলি থাকে, তাও জেনে নেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন, অনেক গবেষক রাতে কাজ করা পছন্দ করে থাকেন এবং কিছু সংস্থায় এমন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। সে ক্ষেত্রে দিনের বেলায় নিজের অন্যান্য কাজ করে রাখাই ভালো এবং দুপুরে ভালো ঘুমাতে হবে, যাতে রাতে কাজ করতে সমস্যা না হয়।
তবে, বাড়িতে বসে গবেষণা সংক্রান্ত কাজ বা লেখালেখি করতে চাইলে, সেখানে মানানসই পরিবেশ তৈরি করে নেওয়াই ভালো। প্রথমে বাড়ির একটি কক্ষকে কাজের জায়গা হিসেবে বেছে নিন। ওই জায়াগাটিই হবে আপনার ওয়ার্ক স্টেশন। কর্মপরিবেশ ও তার অভ্যন্তরে অবস্থিত মানুষের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্কের অধ্যয়ন অনুযায়ী টেবিল ও চেয়ার বসান, যাতে ওই কক্ষটিকে কাজের জায়গা ছাড়া অন্য কিছু না মনে হয়। যথাসময়ে কাজ শেষ হলে, ল্যাপটপ, প্রিন্টার যথাযথভাবে বন্ধ করে ওই ওয়ার্কস্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে। এতে কাজের পরিবেশ থেকে নিজের ব্যক্তিগত পরিসরে ফিরে আসতে সুবিধা হয়। এই গোটা বিষয়টি ‘সুইচ ওভার’ নামেও পরিচিত।
‘সুইচ ওভার’ বিষয়টি গবেষণাগারে কাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সারাদিন কাজের পরে অনেকে কিছুক্ষণের জন্য ধ্যান করে থাকেন গবেষণাগারেরই যেকোনো একটা কক্ষে। কাজের যাবতীয় চাপ ও হতাশা ওই পদ্ধতিতে বেরিয়ে আসে। আর এভাবেই কাজের শেষে ব্যক্তিগত পরিসরে ফিরে যাওয়া যেতে পারে।
সাধারণত, গবেষকরা প্রতিদিন একটি সময় সারণী অনুযায়ী কাজ করে থাকেন। তবে, তা নিজের কাজের জন্য ব্যবহারের পাশাপাশি, পরিবার ও গবেষণাগারের সকলকেও জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি অনেক বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।