শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে শিক্ষক সংকট, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। সংকট নিরসনে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। অধ্যক্ষ বলছেন দ্রুত সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের গেটের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীদের দাবি মানা না হলে কলেজে শাটডাউন চলবে বলে জানান তারা।
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ সূত্র জানিয়েছে, কলেজের ৩৩৪টি পদের মধ্যে ১৭৩টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও, বর্তমানে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উভয় ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বর্তমানে কলেজে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। বিশেষ করে মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, ফিজিওলোজি, সিসিইউ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ডিপার্টমেন্টসহ ডেন্টাল ইউনিটেরও অধিকাংশ ডিপার্টমেন্ট এ শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা মানসম্মত ক্লাস ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুই দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে অনতিবিলম্বে মেডিকেল কলেজের সকল ডিপার্টমেন্ট এ শূন্য পদগুলোতে শিক্ষক পদায়ন করা। অবিলম্বে কমিউনিটি মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি ও অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের বদলিকৃত শিক্ষকদের তাদের স্বপদে পুনরায় পদায়ন করতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করার দাবি জানান।
অপরদিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতি অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপিতে তারা বলেন, মেডিকেল কলেজে কমিউনিটি মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি ও কার্ডিওলজি বিভাগসহ প্রায় সকল বিভাগেই প্রবল শিক্ষক সংকট বিদ্যমান। অনুমোদিত জনবলের তুলনায় কর্মরত শিক্ষকদের সংখ্যা নিতান্তই অপ্রতুল। এমতাবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণ, হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান, একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে অধ্যক্ষ মহোদয়ের কার্যালয়কে সহযোগিতা প্রদানের জন্য শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণ করা অতীব জরুরি।
অতএব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অতি দ্রুত শিক্ষক সংকট নিরসনের আশু ব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ফয়জুল বাশার বলেন, শিক্ষার্থীদের এই দাবি যৌক্তিক ও তাদের দাবিদাওয়া গুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা চলছে।