চার বছরে দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে শাবিপ্রবির ভর্তি ফি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তির তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ১৫ থেকে ১৭ এপ্রিল নির্ধারিত ইউনিট অনুযায়ী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফিসহ সশরীরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এই শিক্ষাবর্ষে একজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি ফি হিসেবে গুনতে হবে ১৭ হাজার টাকা। যা ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে এককভাবে আয়োজিত সর্বশেষ ভর্তি পরীক্ষার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এই ‘ভর্তি ফি অযৌক্তিক’ উল্লেখ করে তা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার দাবি তুলেছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে শাবিপ্রবি একক ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীপ্রতি ভর্তি ফি ছিল আট হাজার টাকা। পরবর্তী চার বছর গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি নেওয়া হয় এবং সেই সময়ে ভর্তি ফি ছিল যথাক্রমে আট হাজার ৬০০, ১৫ হাজার, ১৭ হাজার ২৫০ ও সর্বশেষ ১৮ হাজার টাকা।
এদিকে চলতি শিক্ষাবর্ষে ফের একক ভর্তি প্রক্রিয়ায় ফিরলেও তুলনামূলকভাবে কমেনি শাবিপ্রবির ভর্তি ফি। ফলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ছাত্রসংগঠনগুলোর বিবৃতির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।
ভর্তি ফি কমানো ও তা যৌক্তিক পর্যায়ে আনার দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নের মতো সংগঠনগুলো। একই দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রদল বিবৃতিতে ভর্তি ফি ‘মাত্রাতিরিক্ত’ আখ্যা দিয়ে বলেছে ‘এটি অনেক শিক্ষার্থীর সাধ্যের বাইরে।’ ছাত্রশিবির বলেছে, ‘ভর্তি ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রেখে দেশে উচ্চ শিক্ষার পথ সুগম করে দেওয়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব। এই ধরনের ভর্তি ফি শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার পথকে কঠিন করে তুলবে।’
ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ভর্তি ফি-কে ‘অবান্তর’ এবং ‘নিম্নবিত্তের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র’ অভিহিত করে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর বিবৃতিতেও একই দাবি লক্ষ করা গেছে।
এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়গুলো আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, চলতি বছরে একক ভর্তি পরীক্ষা নিলেও শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা পাঁচটি বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নিয়েছি। ফলে ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের আগের তুলনায় বেশি ব্যয় হয়েছে।
ভর্তি ফি কমানোর ব্যাপারে অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা ইতিবাচক। যদি কোনো খাত থেকে ফি কমানো সম্ভব হয়, সেটির সিদ্ধান্ত নেবে একাডেমিক কাউন্সিল। তবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্নের পর এই সিদ্ধান্ত এলে অতিরিক্ত ফি শিক্ষার্থীদের পরবর্তী একাডেমিক কার্যক্রমে সমন্বয় করা হবে।