ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। ফলসি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকে মাত্র ৪২ ভোট পড়েছে। প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এ ইউনিয়নের নয়টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থী ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগনেতা নিমাই চাঁদ মণ্ডল। তিনটি কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন মাত্র একটি করে ভোট। ফলাফল ঘরে তুলেছেন দলীয় বিদ্রোহী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট বজলুর রহমান। তিনি পেয়েছেন চার হাজার ৬২৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান পেয়েছেন চার হাজার ১৭৯ ভোট।

অন্যদিকে জোড়াদহ ইউনিয়নে জাহিদুল ইসলাম বাবু ও ভায়না ইউনিয়নে নাজমুল হুদা তুষার নৌকা প্রতীক নিয়ে জয় লাভ করেছেন। উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্র ছিল ৮২টি। চেয়ারম্যানের পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৩৭ জন প্রার্থী। এ ছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮৫ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ২৬৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল এক লাখ ৩৯ হাজার ৪১০। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭০ হাজার ২১১ ও মহিলা ভোটার ৬৯ হাজার ১৯৯।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. নুর উল্লাহ আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ফলসি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৪২৬ জন। ভোট পড়েছে ইট হাজার ৮৪৪টি। সব কেন্দ্র মিলিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট পড়েছে মাত্র ৪২টি।

পরাজিত প্রার্থী নিমাই চাঁদ মণ্ডল বলেন, নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর আমি আশা করেছিলাম ভোটে জিতব। কিন্তু এমন কেন হলো তা তো বলতে পারছি না। এখানে আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটি হতে পারে।

বিজয়ী প্রার্থী অ্যাডভোকেট বজলুর রহমান বলেন, ‘যিনি নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন তিনি জনবিচ্ছিন্ন ছিলেন। দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছিল কিন্তু ভোটাররা তাকে পছন্দ করে না বলে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি মনে করি ভোটাররা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা-ই সঠিক। প্রতীকের চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন ভোটাররা।’

এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন মাত্র দুজন। বুধবার অনুষ্ঠিত পঞ্চম ধাপের এ নির্বাচনে বাঘা বাঘা আওয়ামী লীগনেতা নৌকা প্রতীক পাওয়ার পরও পরাজিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) ছয়জন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন চাঁদপুর ইউনিয়নে কামাল হোসেন, রঘুনাথপুর ইউনিয়নে বশির উদ্দীন, ফলসি ইউনিয়নে অ্যাডভোকেট বজলুর রহমান, কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নে শরাফুমৌলা ঝন্টু, দৌলতপুর ইউনিয়নে আবুল কালাম আজাদ ও তাহেরহুদা ইউনিয়নে মঞ্জুর রাশেদ।