আবাসিক এলাকায় উচ্চ স্বরে গান বাজানোর শাস্তি কী?
সম্প্রতি রাজধানীতে বিয়ের অনুষ্ঠানে উচ্চ স্বরে গান বাজানোর প্রতিবাদ করায় নাজমুল হক (৬৫) নামের এক বৃদ্ধকে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ রকম উচ্চ স্বরে গানের ঘটনা রাজধানীসহ সারাদেশে ‘নিত্যনৈমত্তিক’ ব্যাপার।
এ ব্যাপারে কেউ মুখ না খুললেও নাজমুল হক নামের এক বৃদ্ধ প্রতিবাদ করায় নিহত হন। এ বিষয়ে জনমনে সচেতনতার অভাবেই শব্দ দূষণ হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর অধীনে ২০০৬ সালে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। এই বিধিমালার ৯ ধারায় উচ্চস্বরে গান বাজানোসহ বিভিন্ন ধরনের শব্দ দূষণের বিষয়ে বলা আছে।
বিধিমালায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পেয়ে আবাসিক এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ মানমাত্রা অতিক্রম করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে আবাসিক এলাকায় দিনের বেলায় ৫৫ ডেসিবেল ও রাতের বেলায় ৪৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দ অতিক্রম করতে পারবে না।
তবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে খোলা বা আংশিক খোলা জায়গায় বিয়ে বা অন্য কোনো কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে গান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কনসার্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক বা অন্য কোনো ধরনের সভা, মেলা, যাত্রাগানের অনুষ্ঠান করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে অনুষ্ঠান আয়োজককারী ব্যক্তিকে পুলিশ কমিশনার বা সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। সে আবেদন মঞ্জুর হলে দৈনিক ৫ ঘণ্টা শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্র বাজানো যাবে এবং রাত ১০টার পরে তা আর বাজানো যাবে না।
এ আইনের ১৮ ধারায় বলা আছে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আবাসিক এলাকায় শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্র বাজালে বা আইন অমান্য করলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং এক মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ ছাড়া পরে একই ধরনের অপরাধ করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৬ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
লেখক : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট