দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর সহযোগী ঘোড়া!
ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ল্যাঞ্চশায়ারের ব্ল্যাকবার্ন শহরে প্রথমবারের মতো দৃষ্টি সমস্যায় ভোগা এক ব্যক্তির সহযোগী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এক ঘোড়াকে। ঘোড়াটি ওই ব্যক্তিকে দৈনন্দিন কাজকর্ম, চলাফেরায় গাইড হিসেবে সহায়তা করবে।
২৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম সেলিম পাটেল। তিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। সেলিম বর্তমানে ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’ নামক চোখের অসুখে ভুগছেন। তাঁর ডান চোখে সামান্য দৃষ্টিশক্তি অবশিষ্ট আছে এবং ক্রমে তাও নিঃশেষ হয়ে যাবে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির গাইড হিসেবে সাধারণত কুকুরকে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই কুকুর ভয় পাওয়ায় সেলিমের জন্য ঘোড়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সেলিমের সহযোগী হতে যাওয়া ঘোড়াটির নাম ‘ডিগবি’। দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি চলে যাওয়ার পর সেলিমের গাইড হিসেবে যোগ দেবে ডিগবি। সে বর্তমানে প্রশিক্ষণাধীন।
ইন্ডিয়াভিত্তিক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সেলিম বলেন, ‘ডিগবি এখনো বাচ্চা। ২০১৯ সালের মে মাসে ওর বয়স দুই বছর হবে। ডিগবির প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হতেও আরো প্রায় দুই বছর লাগবে। আমি আশা করছি, প্রশিক্ষণ শেষ হলেই ওকে আমার শহর ব্ল্যাকবার্নে নিয়ে আসতে পারব।’
‘(ও ধীরে ধীরেই আসুক,) তাড়াহুড়োর কিছু নেই, যেমনটা আছে কুকুরের ক্ষেত্রে। ডিগবির বয়স ৪০ হলেও ও কর্মক্ষম থাকবে। অথচ কুকুর হলে সেটা হতো আট বছর’, বলেন পাটেল।
ডিগবির সঙ্গে সময় কাটাবার পর গাইড হিসেবে কুকুরের চেয়ে ঘোড়া যে অনেক বেশি কাজের সে বিষয়ে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সেলিম। ঘোড়ার দীর্ঘ কর্মজীবন সেই বিশ্বাসের পক্ষে সেলিমের অন্যতম প্রভাবক। তা বাদেও ঘোড়ার দৃষ্টিপরিধি ৩৫০ ডিগ্রি ও সে অন্ধকারে দেখতে পায় সেসবও অন্যতম কারণ।
পাটেল আরো বলেন, ‘গাইড হিসেবে ঘোড়া দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটাচলা করতে সক্ষম। ডিগবির প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করতে যদি দুই বছরের বেশি সময়ও লাগে, তাতেও খুব একটা সমস্যা নেই। আমি দশকের পর দশক ওকে আমার সঙ্গী হিসেবে পাব।’
যুক্তরাজ্যে সম্মানসূচক বাৎসরিক ‘অ্যাম্পলিফন’ পুরস্কার বিতরণী উৎসবের মূল পর্বে পোষা প্রাণী হিসেবে ‘হিরো পেট ক্যাটাগরিতে’ চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়া অন্যতম প্রাণী হিসেবে ডিগবি প্রথম সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আগামী মঙ্গলবার ওই পুরস্কার ঘোষণা করা হবে।
ডিগবির এমন সাফল্য প্রসঙ্গে পাটেল বলেন, ‘এটা খুবই আনন্দের যে অসাধারণ নৈপূণ্যের জন্য ডিগবি স্বীকৃতি পেয়েছে। (নিজের সক্ষমতা বাড়াতে) এখনো সে প্রশিক্ষণ নিয়েই চলেছে। ও তো তারকা!’