সিঙ্গাপুরে বাংলা কবিতার জয়
সিঙ্গাপুরে অভিবাসী কবিতা উৎসবে গতবারের মতো এবারও বিজয়ী হয়েছে বাংলা কবিতা। রোববার সন্ধ্যায় ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত হয় সিঙ্গাপুরের অভিবাসীদের অংশগ্রহণে এ কবিতা উৎসব।
সিঙ্গাপুরের একমাত্র বাংলা পত্রিকা বাংলার কণ্ঠ ও মাইগ্র্যান্ট পোয়েট্রি অরগানাইজিং কমিটির (অভিবাসী কবিতা আয়োজক কমিটি) যৌথ আয়োজনে দ্বিতীয়বারের মতো এই উৎসবে বাঙালি ও ভারতীয় কবিদের সঙ্গে যুক্ত হয় ফিলিপিনো, ইন্দোনেশিয়ান, চিনের কবিরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির শিবাজি দাশ। তিনি উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং আগামীতেও ধারাবাহিকভাবে এই উৎসব উদযাপনের জন্য সবার দোয়া ও ভালোবাসা কামনা করেন।
অন্য আয়োজক বাংলার কণ্ঠ সম্পাদক এ কে এম মোহসীন তাঁর বক্তব্যে শ্রমজীবী লেখকদের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া ২০০৬ সালে সাহিত্যকেন্দ্রিক বাংলার কণ্ঠ প্রকাশ, ২০১১ সালে অভিবাসীদের সাহিত্যচর্চা কেন্দ্র ‘দিবাশ্রম’ প্রতিষ্ঠার কথা, ২০১২ সালে বাঙালি শ্রমজীবীদের সাহিত্যের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে পুরস্কার দেওয়ার কথা বলেন মোহসীন।
এরপর ১৪ জন প্রতিযোগী তাঁদের নিজ ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করেন, প্রজেক্টরে যার ইংরেজি অনুবাদ দেখানো হয়। আবৃতির পরে সেই কবিতার ইংরেজি অনুবাদ দর্শকদের পড়ে শোনান সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। এরপর বিশেষ অতিথি ফিলিপাইনের হাইকমিশনার আন্তোনিও মোরালেস, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রতিনিধি মেলিন্ডা পেইজ।
‘কবিতায় জীবনের গল্প’ শিরোনামে এবারের উৎসবে ছয় ভাষাভাষী ৭৪ জন কবি তাদের স্বরচিত কবিতা জমা দেন, কবিতা যাচাই-বাছাই করে বিচারকরা সাতজন পুরুষ ও সাতজন নারী কবির সমন্বয়ে মোট ১৪ জনকে ফাইনালের জন্য নির্বাচিত করেন। এদের মধ্যে তিনজন বাঙালি, তিনজন চীনের, তিনজন ফিলিপিনো, তিনজন ইন্দোনেশীয় ও ভারতের দুজন ছিলেন। গত বছরের মতো এবারও বিচারকের রায়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বাংলাদেশি কবি জাকির হোসেন খোকন, দ্বিতীয় বাংলাদেশি কবি মোহর খান, তৃতীয় হয়েছেন ইন্দোনেশীয় মেয়ে কবি শারাসিয়ামসি ইয়াহইয়া।
বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পান ভারতের দুই কবি রাঙ্গা রাজন ও সন্দীপ খাওর। বিচারক ও আয়োজকরা বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র সনদপত্র তুলে দেন।
গত বছর ১৬ নভেম্বর ‘শ্রম ও প্রেমের কবিতা’ শিরোনামে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। তাতে অংশ নিয়েছিলেন বাংলার কণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের ২৭ জন ও একজন ভারতীয় কবি। ফাইনালে নির্বাচিত ১০ জনের ভেতরে সেই উৎসবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন বাংলাদেশি কবি রাজীব শীল জীবন ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল ভারতীয় কবি রাঙ্গা রাজন।
অনুষ্ঠানের বিচারকরা হলেন ঘো বেং চু, গোপিকা জাদেজা ও পম্পা ঘোষ।
এবারের উৎসবে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস, সিঙ্গাপুর সাহিত্য কেন্দ্র, ন্যাশনাল লাইব্রেরি (সিঙ্গাপুর), জো অ্যান্ড ডাউ, কিম উই কেন্দ্র প্রভৃতি।