আজ সরস্বতী পূজা

আজ সরস্বতী পূজা। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম এই ধর্মীয় উৎসবে পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন অগণিত ভক্ত ও শিক্ষার্থী। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে প্রণতি জানাবেন তাঁরা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী।
‘সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাংদেহী নমোস্ততে’—সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য দেবী সরস্বতীর অর্চনা করবেন।
বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশে বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরো সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।’
‘জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে বাণী অর্চনার এই আবহ অম্লান হোক ’ কামনা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত হয়ে দেশের প্রত্যেক মানুষ অসাম্প্রদায়িকতা, অজ্ঞানতার অন্ধকার, কূপমণ্ডূকতা আর অকল্যাণকর সব বাধা পেরিয়ে একটি উন্নত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে—এটাই সকলের প্রত্যাশা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে দেবী সরস্বতীর পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে রয়েছে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা। আবহমানকাল ধরে এখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন। তাঁরা নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করছেন।’
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি।
প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে বিদ্যা ও আরাধনার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
সকালে শুরু হবে অর্চনা এবং ১০টা থেকে শুরু হবে অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যায় হবে আরতি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ ছাড়া হলজুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের বিদ্যার্থীরা তৈরি করেছেন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে প্রতিমা ও নানা মেটাফোরিক্যাল মণ্ডপ। দৃষ্টিনন্দন এই মহোৎসবে প্রতিফলিত হয়েছে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির শাশ্বত মহিমা এবং একই সময় রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির কলাকৌশল ও বিজ্ঞানের সমন্বিত শিল্পরূপ।
শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পূজা শুরু সকাল ৮টায়, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে, প্রসাদ বিতরণ দুপুর ১২টায় এবং সন্ধ্যায় আরতি।