আপনার জিজ্ঞাসা
জীবন বাঁচানো কি ফরজ?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ২১৯২তম পর্বে নিজের জীবন বাঁচানো ফরজ কি না, সে সম্পর্কে ঢাকা থেকে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : সমাজে প্রচলিত একটি কথা ‘নিজের জীবন বাঁচানো ফরজ’—ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী কথাটি বিশ্লেষণ করবেন? এর আদৌ কোনো ভিত্তি আছে কি?
উত্তর : এটি ইসলামী শরিয়তের ভিত্তি। শরিয়তে যে বিষয়গুলো মানুষের জন্য একেবারে অপরিহার্য, তার একেবারে প্রথম অংশ হচ্ছে আত্মরক্ষা করা, নিজেকে বাঁচানো, হেফাজত করা।
আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা করো না’, ‘তোমরা নিজেদের ধ্বংস করে দিও না।’
এ কাজটি বিভিন্নভাবে হতে পারে, যেমন—খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়ে হতে পারে, চিকিৎসা না করে হতে পারে, এগুলোকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনের মধ্যে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন।
নিজেকে ধ্বংস করা বা হত্যা করা যে হারাম, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এ কারণে আত্মহত্যাকারীর অপরাধকে ইসলাম এত কঠিন অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে যে, যদি কেউ এই আত্মহত্যার অপরাধ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে এবং সে আত্মহত্যায় লিপ্ত হয়, তাহলে সে কাফের ও মুশরিকদের মতো চিরস্থায়ী জাহান্নামি। জুলুম অন্যের ওপরও করা যাবে না, নিজের ওপরও করা যাবে না।
আল্লাহর বান্দা কোনোভাবেই যেন নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে না দেন, এ জন্য তার কাছে যদি খাওয়ার মতো কিছুই না থাকে, তখন ইসলামে যে খাবারগুলো খাওয়া একেবারে হারাম করা হয়েছে, সেগুলোও খাওয়া জায়েজ করা হয়েছে।
যেমন : মৃত জানোয়ার, শূকর, রক্ত বা এই জাতীয় কিছু যেগুলো খাওয়া ইসলামে কঠিনভাবে হারাম, সেগুলো জীবন রক্ষার জন্য ঠিক যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু খাওয়া তার জন্য জায়েজ করা হয়েছে। কারণ নিজেকে ধ্বংস করা যাবে না।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন, ‘যদি কেউ বাধ্য হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহতায়ালা তার কাছ থেকে এই কাজের গুনাহটি উঠিয়ে নেবেন।’