আপনার জিজ্ঞাসা
ঈদে মিলাদুন্নবীতে আমাদের কী করা উচিত?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ৫৬৬তম পর্বে একজন জানতে চেয়েছেন, ঈদে মিলাদুন্নবীতে আমাদের কী করা উচিত? অনুলিখন করেছেন সাইফ আহমেদ।
প্রশ্ন : ঈদে মিলাদুন্নবীতে আমাদের কী করা উচিত? বর্তমানে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ওরশ বা মাহফিল বা এটা-সেটা হয়, তো এ বিষয়ে কোরআন সুন্নাহ কোনটা সমর্থন করে?
উত্তর : ধন্যবাদ আপনাকে। মিলাদ শব্দের অর্থ জন্ম। মিলাদুন্নবি অর্থ রাসুলের জন্ম। এই পরিভাষাগুলো এভাবে এসেছে। তবে মিলাদুন্নবি নামে সাহাবায়ে কেরাম রাসুল (সা.) যে দিনে জন্মগ্রহণ করেছেন এটাকে নিয়ে কোনো উৎসব করেছেন, অথবা সেটাকে মিলাদুন্নবি বানিয়ে কোনো অনুষ্ঠান করেছেন, এমন কিছু জানা যায়নি।
হাদিসের মধ্যে এসেছে ‘আমি করি নাই এমন কোনো কাজ এই দ্বীনের মধ্যে কোনো ব্যক্তি যদি তৈরি করে তাহলে সেটা পরিত্যাজ্য হবে, বা এটা গ্রহণ করা হবে না এবং বেদাত বলে পরিগণিত হবে।’ আমাদের নবী কবে জন্মগ্রহণ করেছেন কবে মৃত্যু বরণ করেছেন এটা নিয়ে মতপার্থক্য আছে। জন্মের দিনটা কোন দিন ছিল আর মৃত্যুর দিনটা কোন দিন ছিল এ নিয়ে আহলে এলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। তবে তিনি যে মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন, সেই মাসেই মৃত্যুবরণও করেছেন, এ ব্যাপরে সব ওলামায়ে কেরাম একমত।
তো আল্লাহর রাসুল(সা.) যেখানে মৃত্যুবরণ করেছেন সে সময় উনি জন্মগ্রহণ করেছেন বলে এজন্য আমরা আনন্দ করব, এটা করার তো কোনো সুযোগ নেই। বরং আমাদের যেটা করা উচিত, রাসুল (সা.) কে অনুসরণ করে আমাদের আমল করা উচিত। রাসুল (সা.) কে আল্লাহ বলছেন ‘বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার রাসুলের আনুগত্যের মাধ্যমে তাকে ভালোবাস।’ এজন্য রাসুলের (সা.) প্রতি আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, রাসুল (সা.)-এর অনুসরণ করে আমরা আমল করব।
আল্লাহতায়ালা আমাদের বলেছেন রাসুল(সা.)-এর ওপর সালাত ও সালাম পাঠ করার জন্য।‘হে মুমিনগণ, আল্লাহ এবং ফেরেশতারা রাসুলের ওপরে সালাত ও সালাম পেশ করে, তোমরাও রাসুলের ওপর সালাত ও সালাম পেশ করো।’ যখন এই আয়াত নাজিল হলো, সাহাবায়ে কেরাম (রা.) রাসুলের কাছে আসলেন এবং বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমরা তো আপনার ওপর সালাম পেশে করি। সাথে আল্লাহ আয়াত নাজিল করলেন, সালাত পাঠ করার জন্য। সেটা কীভাবে করব?’। রাসুল (সা.) তখন তাদের শিখিয়ে দিলেন, দরুদে ইব্রাহিম, যেটা আমরা নামাজে পড়ি। অধিকাংশ আলেমদের মতে এটা পড়া ওয়াজিব করে দিয়েছেন।
সাহাবায়ে কেরাম এভাবেই শিখিয়ে গিয়েছেন, যে আয়াত যখন নাজিল হয়েছে কীভাবে রাসুলের (সা.) কাছ থেকে তারা এটা শিখেছেন। আর সেটা বাদ দিয়ে মিলাদ নামে এভাবে প্রতি বছর ঘটা করে ১২ রবিউল আউয়ালে কোনো কাজ করা বা ঘটা করে পালন করা আমাদের উচিত নয়।