রম্য
খুশির ঠ্যালায় যা যা করল তারা
বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বেশি খুশিতে থাকলে কী কী করেন— এটা আপনার জানতে ইচ্ছে হতেই পারে। অনেক গবেষণা করে সেসব জানাচ্ছেন হাস্যরসের অজ্ঞ প্রতিবেদক।
১. প্রেমিকা পার্কে বসে প্রেমিকের জন্য অপেক্ষা করছে। প্রেমিক এসে প্রেমিকাকে ফুলকপি উপহার দিল।
প্রেমিকা : মানে বুঝলাম না। তুমি ফুল না দিয়ে আমাকে ফুলকপি কেন দিলে?
প্রেমিক : এই মনে কর খুশির ঠ্যালায়। আজকে আমার চাকরি হইছে। এখন আর কেউ বিয়ে ঠেকাতে পারবে না। ভাবলাম বিয়ের পর তো তোমার ফুলকপি রান্না করতে হবে তাই উত্তেজিত হয়ে এটাই কিনে নিয়ে এলাম।
২. পলাশ আর শিমুল দুই বন্ধু। একজন খেলা পাগল আর একজন সিনেমা পাগল। চলছে বিপিএল। পলাশ প্রতিদিন মাঠে গিয়ে খেলা দেখছে একা একা। আজ হঠাৎ পলাশকে শিমুল বলল, ‘দোস্ত, আমিও আজকে তোর সাথে মাঠে খেলা দেখতে যাব।’
পলাশ খুশি হয়ে শিমুলকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘তুই আসলেই আমার প্রিয় বন্ধু। কিন্তু আজ হঠাৎ স্টেডিয়ামে যেতে চাচ্ছিস?’
‘আরে খুশির ঠ্যালায়, ঘোরতে। ফেসবুকে হিরো আলম স্ট্যাটাস দিছে সে আজ গ্যালারিতে বসে খেলা দেখবে। তাই আমিও মাঠে যাব। যেভাবেই হোক হিরো আলমের সঙ্গে আমরা সেলফি চাই-ই।’
৩. ফেসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন রঙের শাড়ি বিক্রি করেন তমা ভাবি। দিনে একবার লাইভে এলেও আজ বহুবার লাইভে এসে বিভিন্ন শাড়ি পরে সবাইকে দেখিয়েছেন তিনি। এটা দেখে অনলাইন এক ক্রেতা তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘তমা ভাবি, আজ বারবার লাইভে আসছেন। কারণ কী?’
তমা ভাবি : এই মনে করেন ভালো লাগে। খুশির ঠ্যালায় আপা আমার মাথা একদম কাজ করছে না। এখন বিয়ের মৌসুম। প্রায় প্রতিদিনই বিয়ের দাওয়াত। আর দাওয়াত মানে নতুন নতুন শাড়ি আর গয়না পরে যেতেই হবে। আমাকে কোন রঙের শাড়ি মানাবে সেটা তো আগে থেকে ধারণা করতে পারছি না আপা। তাই বারবার লাইভে এসে বিভিন্ন রঙের শাড়ি পরছি আর সবাইকে জিজ্ঞাসা করছি, ‘কেমন লাগছে?’ যে শাড়িগুলোতে সবচেয়ে সুন্দর মন্তব্য পাব সেই শাড়িগুলোই দাওয়াতে পরব আপা। বুঝেন না! এক ঢিলে দুই পাখি মারছি।
৪. রাস্তায় জ্যাম শেষ। তারপরও এক কোনায় গাড়িতে বসে আছে এক যুবক। ট্রাফিক পুলিশ এগিয়ে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘ভাই, জ্যাম তো শেষ। আপনি গাড়িতে বসে আছেন কেন?’
যুবক : এই মনে করেন ভালো লাগে, খুশির ঠ্যালায়, ঘোরতে।
ট্রাফিক পুলিশ : পাগল নাকি!
যুবক : নারে ভাই পাগল না। আজকে আমি খুব খুশি। বাইরে না ঘুরে তাই গাড়িতেই বসে আছি। শুধু শুধু সময় আর টাকা নষ্ট করব কেন? রাতে বাসায় গিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস লিখব, ‘৫০% ডিসকাউন্টে গাজীপুরে একটি রিসোর্ট থেকে ঘুরে এলাম। খুব সুন্দর জায়গা। ’ যেহেতু মিথ্যা কথা লিখব তাই গাড়িতে লুকিয়ে বসে আছি। কোনো বন্ধু দেখে ফেললে খবর আছে।
ট্রাফিক পুলিশ : ভাই, মিথ্যা লিখবেন কেন?
যুবক : মনে করেন এটা লিখলে আমার বন্ধুরাও সেখানে ডিসকাউন্টে যাইতে চাইবে। পরে তারা আমাকে ফ্রিতে ঘুরতে নিয়ে যাবে। যাওয়ার পর আমি বলব, ‘দোস্ত, ডিসকাউন্ট অফার তো শেষ। তোরা আগে বলবি না যে ডিসকাউন্টে যেতে চাস? তাহলে আগামী বছর তোদের নিয়ে আসতাম।’ এসব ভেবেই আমার খুব ভালো লাগতেছে।