বিক্রির চাপে ডিএসইতে ৫৮ শতাংশ কোম্পানির দরপতন, মন্দায় সূচক
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ)। শেয়ার বেচার চাপ বাড়ায় এদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়। কমেছে বাজারে মূলধনের পরিমাণ। তবে লেনদেন পরিমাণ বেড়েছে। লেনদেন ৮৪৩ কোটি টাকার ঘরের কাছাকাছিতে এসেছে। সূচক পতনের একই চিত্র ছিল অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। কমেছে লেনদেনসহ পুঁজিবাজারে মূলধন পরিমাণ। অধিকাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে।
স্টক এক্সচেঞ্জ ওয়েবসাইট অনুসন্ধানে দেখা যায়, শেয়ার বিক্রয়ের চাপে ডিএসইতে লেনদেনের শুরুতেই সূচক পতন হয়। লেনদেন শুরুর প্রথম ২মিনিটে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পতন হয় ২৭ পয়েন্ট। ডিএসইএক্স সূচক অবস্থান করেছিল ছয় হাজার ১৪৮ পয়েন্টে। পরে সূচক বাড়তে থাকে। ওইসময় শেয়ার ক্রয়ের চাপ বাড়ে। এতে ডিএসইএক্স উত্থানে উঠে আসে। লেনদেন শুরুর ২২ মিনিটে সূচক উত্থান হয় ১২ পয়েন্ট। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেই সূচক পতনে ফিরে। লেনদেনে শেষে ডিএসইএক্স কমেছে ৪৪ পয়েন্ট। লেনদেন ৮৪৩ কোটি টাকার ছাড়িয়েছে। ৫৮ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়।
স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হয় ৮৪৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবস সোমবার লেনদেন ৭৯৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এদিন পুঁজিবাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৪৮ হাজার ২০৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবস সোমবার বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৫২ হাজার ২২৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার। মঙ্গলবার সূচক ডিএসইএক্স ৪৪ দশমিক ১০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১৩১ দশমিক ১৪ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক চার দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৪০ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএস৩০ সূচক ১০ দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৯৭ দশমিক ৭১ পয়েন্টে। ডিএসইতে এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির ও কমেছে ২৩২টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ৬৩টির।
আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেন শীর্ষ উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৪১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং সিরামিকের ৩৭ কোটি ছয় লাখ টাকা, সেন্ট্রাল ফার্মার ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, লাভেলো আইসক্রিমের ২৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, বেস্ট হোল্ডিংসের ২২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, এডভেন্ট ফার্মার ২০ কোটি ৯০ লাখ টাকা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা, ফরচুন সুজের ১৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং মুন্নু ফেব্রিক্সের ১৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মঙ্গলবার ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবস সোমবার লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৪২ হাজার ৪১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস সোমবার বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৪৫ হাজার ৬৯১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সিএসই প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৪৪ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৯৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই৫০ সূচক ১৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৪৩ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৮১ দশমিক ২৭ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক চার দশমিক ৬৫ পয়েন্ট কমেছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৫৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৮২টির এবং কমেছে ১৩৪টির। শেয়ার দর পরিবর্তন হয়নি ৩৯টির।
আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ার। কোম্পানিটির দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেন শীর্ষ উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দুই কোটি ৬২ লাখ টাকা, বেস্ট হোল্ডিংসের ৭৪ লাখ টাকা, গোল্ডেন সনের ৪০ লাখ টাকা, এডভেন্ট ফার্মার ২৫ লাখ টাকা, মালেক স্পিনিংয়ের ২৪ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুডের ২২ লাখ টাকা, সেন্ট্রাল ফার্মার ২১ লাখ টাকা, গ্রামীণফোনের ১৭ লাখ টাকা এবং ফরচুন সুজের ১৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।