এস কে ট্রিমসের শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশ পাবেন রোববার
এস কে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের গত ২০২২-২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরের (জুলাই-জুন) ঘোষিত তিন শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ইতোমধ্যে কোম্পানির ৭০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার পেয়েছিল। বাকি ৩০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারকে গতকাল বুধবার দেওয়া হয়, যা আগামী রোববারের মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের একাউন্টে পৌছে যাবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ কাইয়ুম হাওলাদার। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এম এ কাইয়ুম হাওলাদার বলেন, করোনার (কোভিড ১৯) পর থেকে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবসা মন্দায় পড়ে। এ কারণে কোম্পানিটির মুনাফা ব্যাপকভাবে কমেছে। ফলে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়াও কমে যায়। গত ২০১৯-২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ নগদ লভাংশ দিলেও তা ২০২২-২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরে তিন শতাংশ নগদ লভাংশ ঘোষণা দিয়েছিল। অবশ্য এই ঘোষিত লভ্যাংশ কোম্পানির ৭০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার পেয়েছিল। বাকি ৩০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারকে গতকাল বুধবার দেওয়া হয়েছে। যা আগামী রোববারের মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের একাউন্টে পৌছে যাবে।
এস কে ট্রিমসের শেয়ারহোল্ডার ৬৭৯৩জন জানিয়ে কাইয়ুম বলেন, কোম্পানিটি ব্যাগ শতভাগ রপ্তানিকারক। কিন্তু ব্যাংকের হিসাব জব্দের মতো ঘটনা ঘটেছে। এতে করে ক্রয়াদেশ বাতিল ও কারখানা বন্ধ করতে হয়েছে। এতে লোকসান গুণছে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা, যা কাম্য নয়। সবারই বোঝা উচিত, এটি একটি পুঁজিবাজারের কোম্পানি। তাই কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া মানেই শেয়ারহোল্ডারের বিরুদ্ধে নেওয়া।
গত ২৫ জুন এসকে ট্রিমসের ওয়ান ব্যাংকে পরিচালনা করা হিসাব এবং ১১ জুলাই ৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়। এতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ, যা গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। এরপর উচ্চ আদালত ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এতে ব্যাংক হিসাব চালু হয়েছে। যাতে করে গত ২১ সেপ্টেম্বর কারখানার কার্যক্রম শুরু করা হয়। তবে, ব্যাংক হিসাব জব্দ ও ক্রয়াদেশ বাতিলকে কেন্দ্র করে এসকে ট্রিমসের শেয়ারহোল্ডারদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। যা এখনো চলমান। এটা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।
ব্যাংক হিসাব জব্দে এসকে ট্রিমসের উৎপাদন বন্ধের খবর প্রকাশের পর একদিনেই (৮ সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর কমেছে ১ টাকা ৮০ পয়সা। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির সব শেয়ারের দর কমেছে ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। গত ১১ জুলাইয়ের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে শেয়ার দর কমেছে বেশি। ১১ জুলাই এসকে ট্রিমসের শেয়ার দর ছিল ২৫ টাকা ৫০ পয়সা, যে শেয়ার এখন ১৪ টাকা ৩০ পয়সা নেমে এসেছে। অর্থাৎ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার খবর প্রকাশের পরে প্রতিটি শেয়ারের দর কমেছে ৪৪ শতাংশ।
গত ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে দেওয়া চিঠিতে এসকে ট্রিমস কর্তৃপক্ষ জানায়, কোম্পানিতে মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের কেউ পর্ষদে নেই এবং তাদের মালিকানা নেই। তবে মতিউর রহমানের ছেলে ও মেয়ে গ্লোবাল ম্যাক্স প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ ও গ্লোবাল সুজের শেয়ারহোল্ডার। অবশ্য ওই দুটি কোম্পানি এসকে ট্রিমসের মালিকানায় আছে।
উল্লেখ্য ২০২০-২০২১ সমাপ্ত অর্থবছরে নগদ লভ্যাংশ পাঁচ শতাংশ ও ২০২১-২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরে নগদ লভ্যাংশ চার লভ্যাংশ দিয়েছিল। অবশ্য গত ২০২২-২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরে তিন শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। যা ২০১৯-২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ নগদ লভাংশ দিয়েছিল।