শেয়ার দর-মূলধন কমলেও লেনদেনের সেরা লাভেলো
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিমের ১৪১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে গত সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতিবার)। যা মোট লেনদেনের আট দশমিক ৩৪ শতাংশ একাই করেছে কোম্পানিটি। এতে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। অপরদিক লেনদেনে শীর্ষে থাকলেও শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৭০ পয়সা। যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন কমেছে পাঁচ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহের ১৭ অক্টোবর কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৯৪ টাকা ২০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৭০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট শেয়ারের মাধ্যমে ডিএসইর বাজারে মূলধন কমেছে পাঁচ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। শেয়ার দর ও মূলধন কমলেও গেল সপ্তাহে শেয়ারটি লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে।
গেল সপ্তাহটিতে ৩৯৬টি কোম্পানির এক হাজার ৬৯৩ কোটি ৪২ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেখানে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির ১৪১ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের আট দশমিক ৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার অডিটেড সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়ায় ৭৫ দশমিক ৪০ পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসেবে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে নেই। মানে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে, ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। মানে পিই রেশিও ৪০ ওপরে গেলে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও যতো বাড়বে ঝুঁকির মাত্রা ততো বাড়তে থাকবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, লাভেলো আইসক্রিমের চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২০২৪) প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টম্বর) আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ৯১ পয়সা। গত অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টম্বর) শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ৩২ পয়সা। আলোচিত প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে এক টাকা ৬৮ পয়সা। আর এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ২৮ পয়সা।
২০২৩-২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাং ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ রয়েছে। ওই অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল এক টাকা ৪৩ পয়সা। সমাপ্ত বছরে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল চার টাকা ১৬ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১৩ টাকা ৩৭ পয়সা।
২০২১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় লাভেলো আইসক্রিম। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৮৫ কোটি টাকা। শেয়ার সংখ্যা আট কোটি ৫০ লাখ। রিজার্ভে রয়েছে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৪১ দশমিক ১২ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দাঁড়ায় ৬৮ কোটি চার লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বল্পমেয়াদি ঋণ এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা।