আরভিনের সেঞ্চুরির পর বাংলাদেশকে স্বস্তি দিলেন নাঈম

Looks like you've blocked notifications!

স্পোর্টিং উইকেটে জিম্বাবুয়ে যেভাবে শুরু করেছিল তাতে রান ৩০০ ছাড়াবে বলে মনে হয়েছিল। দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন দলটির অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। তুলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। কিন্তু তাতেও ৩০০ ছাড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। শেষ বিকেলে চমক দেখান তরুণ অফ স্পিনার নাঈম হাসান। ফেরান সেঞ্চুরিয়ান আরভিনকে। ফলে শেষ পর্যন্ত স্বস্তি নিয়ে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষ করে বাংলাদেশ।

প্রথমদিন শেষে ছয় উইকেটে ২২৮ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। দিন শেষে ০ রানে উইকেটে ছিলেন ট্রিপিয়ানো ও ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন চাকভা। চার উইকেট হাতে নিয়ে আগামীকাল রোববার দ্বিতীয় দিন শুরু করবে জিম্বাবুয়ে।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে বোলিংয়ে পাঠায় জিম্বাবুয়ে। আগে ব্যাট করার সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগায় সফরকারীরা। উইকেটে কিছুটা ঘাস থাকায় প্রথম দিকে বেশ সুবিধা ছিল বাংলাদেশি পেসারদের জন্য। কিন্তু সেই সুবিধা নিতে পারেননি স্বাগতিকরা।

ইনিংসের শুরুটা বেশ সাবধানে করে জিম্বাবুয়ে। রানের দিকে না তাকিয়ে উইকেটে থিতু হতে চান দুই ওপেনার কেভিন কাসুজা ও প্রিন্স মাসভরে। প্রথম ছয় ওভারে তাঁরা নেন কেবল এক রান। সেই রানটিও আসে ওয়াইড থেকে। অষ্টম ওভারে এসে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন আবু জায়েদ রাহি। অষ্টম ওভারের শেষ বলে রাহির বলে নাঈম হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কেভিন কাসুজা। ফেরার আগে ২৪ বলে দুই রান করেন তিনি।

অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ও মাসভরের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দারুণভাবে এগিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় জুটি ভাঙতে বেশ ধুঁকতে হয়েছে বাংলাদেশের বোলারদের। দুজন মিলে এই জুটিতে তোলেন ১১১ রান। শেষ পর্যন্ত অফ স্পিনার নাঈম   ভাঙেন শতরানের এই জুটি।

এরপর ব্যাটিং করতে নামা ব্রেন্ডন টেইলরকেও টিকতে দেননি নাঈম। ১০ রান করা টেইলরকে সরাসরি বোল্ড করেন নাঈম। প্রথম সেশনে দাপট দেখানো জিম্বাবুয়ে শিবিরে জোড়া আঘাত আনেন তরুণ এই অফ স্পিনার। টিকতে দেননি সিকান্দার রাজাকেও । নাঈমের বল কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সিকান্দার।

অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট হারালেও অধিনায়ক আরভিনে টেনেছেন জিম্বাবুয়েকে। আস্থার সঙ্গে খেলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। তিন অঙ্কের ঘরে যেতে ২১৩ বল খেলেছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। যাতে ছিল ১৩টি বাউন্ডারি। ১০৭ রান করে নাঈমের বলে ফেরেন তিনি। অধিনায়কের ফেরার পর শেষ পর্যন্ত ২২৮ রানে প্রথম দিন শেষ করে জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে চারটি উইকেট নেন নাঈম হাসান। আবু জায়েদ রাহি নেন দুটি উইকেট।  

টানা পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার লক্ষ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।  মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে বোলিংয়ে পাঠায় জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পাকিস্তান সফরে যাননি তিনি। তবে এক টেস্ট বাদে ফের দলের হয়ে খেলছেন গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যাটসম্যান।

মুশফিক ছাড়াও একাদশে ফিরেছেন নাঈম হাসান। বিসিএলে দারুণ বোলিং করা তরুণ এই অফ স্পিনারকে একাদশে সুযোগ দিতে ভুল করেনি টিম ম্যানেজম্যান্ট। আগের টেস্টে খেলা মাহমুদউল্লাহ ও রুবেল হোসেনের জায়গায় ফিরেছেন মুশফিক-নাঈম। অন্যদিকে অনেক দিন পর দলের ফিরলেও মূল একাদশে জায়গা হয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের। পেস আক্রমণে সুযোগ মেলেনি তাসকিন আহমেদেরও।

টানা পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার লক্ষ্যে আজ শনিবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে বোলিংয়ে পাঠিয়েছে জিম্বাবুয়ে।

ক্রিকেটে বাংলাদেশের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। বিশেষ করে ক্রিকেটের দীর্ঘ সংস্করণে। গত এক বছরে টেস্টে জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ। শেষ জয়টা এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৮ সালে। তখন প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মিরপুরে উইন্ডিজদের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশে নিজের অধ্যায়ের ইতি টানেন লঙ্কান কোচ। সেই সঙ্গে বাংলাদেশও হারিয়েছে জয়ের ছন্দ।

হারের শুরুটা হয় গত বছর ফ্রেব্রুয়ারিতে। নিউজিল্যান্ড সফরে দুই ম্যাচে হেরে দেশে ফেরে বাংলাদেশ। এরপর ঘরের মাঠে হারে এই ফরম্যাটের নবীন দল আফগানদের কাছে। ডিসেম্বরে ভারত সফরে হোয়াইটওয়াশ। শেষ পাকিস্তানেও ইনিংস ব্যবধানে হার। সব মিলিয়ে হতাশার সাগরে ডুবে আছে বাংলাদেশ।

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস : ২২৮/৬ (কেভিন ২, মাসভরে ৬৪, আরভিন ১০৭, সিকান্দার ১৮, টেইলর ১০, মারুমা ৭, চাকাভা ৯*, ট্রিপিয়ানো ০*; এবাদত ১৭-৮-২৬-০, রাহি ১৬-৪-৫১-২, নাঈম ৩৬-৮-৬৮-৪, ২১-১-৭৫-০)।