ইংরেজি বোঝেন না ক্রিকেটাররা, বিপাকে বিদেশি কোচ
চলতি বিপিএলে সিলেট থান্ডারের কোচ হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার হার্শেল গিবস। দলের ব্যর্থতায় এত দিনে একবারও সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেননি এই দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট। আট ম্যাচে সিলেট থান্ডারের জয় একটিতে, টানা ব্যর্থতায় টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের পথে সিলেট।
তবে সিলেট পর্বে সংবাদমাধ্যম থেকে নিজেকে আড়াল করতে পারলেন না গিবস। দক্ষিণ আফ্রিকান এই কোচ জানালেন দল নিয়ে কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা। যার মধ্যে সবচেয়ে সমস্যা হচ্ছে ভাষা জটিলতা। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ইংরেজি ভাষা বোঝেন না বলেই শিষ্যদের বোঝাতে পারছেন না তিনি। হাসির ছলে গিবস জানান, সামনে থেকে বিপিএলে কোচিং করাতে হলে বাংলা ভাষা শিখতে হবে তাঁর!
শিষ্যদের বোঝাতে না পারার হতাশা নিয়ে গিবস বলেন, ‘আমি ঠিক নিশ্চিত নই, নিল ম্যাকেঞ্জি (বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ) যখন কথা বলে, ওরা কতজন ঠিকভাবে বুঝতে পারে। আমি তো তাঁর মতোই দক্ষিণ আফ্রিকান। আমি ঠিক জানি না, সে যা বলতে চায়, তার সবটুকু ওদের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারে কি না। আমি জানি সে দারুণ ব্যাটিং কোচ। ওর কথামতো কাজ করলে ছেলেরা অনেক শিখতে পারবে। কিন্তু আমি জানি না, ওর কথা ছেলেরা কতটা ধরতে পারছে। ভাষার দূরত্ব তো আছেই। স্থানীয় ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হলো, তাদের অনেকেই ইংরেজি বোঝে না। আমার জন্য তাই তাদের অনেক কিছুই বোঝানো কঠিন। এটি খুবই হতাশার। আমি যখন কথা বলি, দেখি যে তারা শুনছে। কিন্তু দেখেই বুঝতে পারছি যে এসব তাদের মাথায় ঢুকছে না। অনুধাবন করতে পারছে না। খেলাটা নিয়ে তাদের সার্বিক বোঝাপড়ার মান আরো বাড়াতে হবে। একটা বড় ব্যাপার হলো, তারা খুবই টেম্পারামেন্টাল। ওদের কাছে কিছু ব্যাখ্যা করাই কঠিন আমার জন্য। কারণ তারা বুঝতেই পারে না।’
সমস্যাটির ব্যাখ্যাও দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ। বললেন, ‘একটি উদাহরণ দিই, সেদিন রুবেল মিয়া ব্যাটিং ওপেন করেছে। একপর্যায়ে তার রান ছিল ২৮ বলে ১৪। টাইম আউটের সময় আমি মাঠে গিয়ে তাকে বললাম, ‘হচ্ছেটা কী? ২৮ বলে ১৪ রান!’
সে শুনে কেবল ওপর-নিচে মাথা নাড়ল। এটা তার দোষ নয়, কিন্তু বাস্তবতা। ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে না পারার বড় একটি উদাহরণ এটি। ২০২০ সাল চলে এসেছে এখন। এখনো যদি একজন ব্যাটসম্যান বুঝতে না পারেন যে ২৮ বা ২৫ বলে ১৪ রান করলে আমাকে সেখান থেকে চালিয়ে যেতে হবে ও পুষিয়ে দিতে হবে, তাহলে খুবই হতাশার। হতে পারে, আমি খুব বেশি প্রত্যাশা নিয়ে এখানে এসেছিলাম। হতে পারে, স্থানীয় ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়ে একটু বেশিই আশা ছিল আমার। কিন্তু বাস্তবতা হলো, গড়পড়তা মানের চেয়ে ভালো ক্রিকেটার তারাই, যারা ম্যাচ পরিস্থিতি ভালো পড়তে পারে।’