একদিনে পাল্টে গেল সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নাম
পুনর্নির্মাণের পর গতকাল বুধবার প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ গড়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ভারতের আহমেদাবাদে তৈরি হওয়া স্টেডিয়ামটিকে ঘিরে উত্তেজনার কমতি ছিল না। প্রথম ম্যাচকে কেন্দ্র করে মাঠে গেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর ক্রীড়ামন্ত্রী।
ভারত বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্টের প্রথম দিন এলো বড় ঘোষণা। একদিনেই বদলে গেল স্টেডিয়ামটির নাম। এতদিন স্টেডিয়ামের নাম ছিল ‘সরদার প্যাটেল স্টেডিয়াম’। অনেকে আবার মোতেরা স্টেডিয়ামও বলতেন। এবার সেটা বদলে গেল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে। গতকাল দেশটির প্রধানমন্ত্রীর নামে স্টেডিয়ামের নাম ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
এ ব্যাপারে রামনাথ কোবিন্দ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন এই স্টেডিয়ামের ভাবনা প্রথম তাঁর মাথায় এসেছিল। সে সময় গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিলেন তিনি। আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর নামে স্টেডিয়ামটির নামকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি মোদিজির (মোদি সাহেব) স্বপ্নের প্রকল্প।‘
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেলের নামে ১৯৮৩-তে গুজরাটে এই স্টেডিয়াম তৈরি হয়। এর আগে এর নাম ছিল গুজরাট স্টেডিয়াম। এবার থেকে স্টেডিয়ামটির নাম হল ‘নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম’। এই স্টেডিয়ামকে ঘিরে একটি ক্রীড়াক্ষেত্র তৈরি হবে। তার নাম যদিও রাখা হচ্ছে সর্দার প্যাটেল ক্রীড়াক্ষেত্র।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড বা এমসিজি সম্পর্কে বলতে গেলে সবার আগে মাথায় আসে–এটি বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। অস্ট্রেলিয়ার এ গৌরব এবার নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। গুজরাটের আহমেদাবাদের স্টেডিয়ামটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
২০১৫ সালে পুনর্নির্মাণের কাজ শুরুর পর গতকালই এই স্টেডিয়ামে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ দশ হাজার। যদিও করোনা পরিস্থিতির জন্য এবার ৫৫ হাজার দর্শককে খেলা দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে স্টেডিয়ামটি পুনর্নির্মাণের আগে ৫৪ হাজার দর্শকের ধারণ ক্ষমতা ছিল। অন্যদিকে মেলবোর্ন স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা এক লাখ ২৪ জন।
যা থাকছে এই স্টেডিয়ামে
১. স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছে ৬৩ একর জমির ওপর এবং চারদিক থেকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করা যাবে।
২. স্টেডিয়ামটিতে অনেকগুলো ড্রেসিং রুম, ইনডোর প্র্যাকটিস পিচ, আউটডোর পিচ আছে।
৩. স্টেডিয়ামটিতে ৪০ জন অ্যাথলেটের থাকার উপযোগী একটি ডরমেটরি আছে।
৪. কোচ, ফিজিও ও ট্রেনারদের জন্য আলাদা জায়গা আছে।
৫. স্টেডিয়ামটির নকশা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে বাধাহীনভাবে দর্শকেরা পিচ দেখতে পারে।
৬. এখানে রয়েছে সর্বাধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা, যাতে করে বৃষ্টি হলে দ্রুত মাঠ শুকিয়ে যায়, ফলে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যাবে।
৭. এলইডি লাইট সংযোজন করা হয়েছে পুরো ছাদ জুড়ে, যা বাড়িয়েছে নান্দনিকতা।
৮. স্টেডিয়ামটি এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে যেকোনো জায়গা থেকে একই ধরনের মনে হবে পিচ এরিয়াকে।
৯. মোতেরায় নবনির্মিত স্টেডিয়ামে রয়েছে অত্যাধুনিক মানের সুইমিং পুল।
১০. বিভিন্ন ধরনের ইনডোর গেমও রয়েছে স্টেডিয়ামের ভেতরে। ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে এসে ক্রিকেটারেরাও খেলতে পারবেন বিলিয়ার্ডস, স্নুকার থেকে শুরু করে টেবিল টেনিস, সবরকম ইনডোর গেমস।