চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশি যুবাদের নাচ-গান, আইসিসির ভিডিও প্রকাশ
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিশ্বকাপ জয়ে পুরো বাংলাদেশে বইছে আনন্দের উচ্ছ্বাস। জয়ের পরই বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিলের পাশাপাশি মিষ্টি বিতরণও করেন অনেকে। আর সেইসঙ্গে বিশ্বজয়ী যুবকরাও ভাসছেন দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার আর বিশ্লেষকদের প্রশংসার সাগরে। কঠোর পরিশ্রম আর মেধা খাটিয়ে এমন একটি অর্জনের পর স্বাভাবিকভাবেই উল্লাসে মেতে উঠেছেন তাঁরা। জয়ের পরই মাঠ ও ড্রেসিং রুমে নাচ-গান ও উল্লাসে মেতে ওঠেন। বিশ্বজয়ী যুবাদের এমনই একটি উল্লাসের ভিডিও নিজেদের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউবে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এরপর মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এলোপাতাড়ি নাচ-গানে মুখর আকবররা। সেই সঙ্গে চলছে পাগলামি আর একে অপরের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে স্যালুট আর জয়সূচক চিহ্ন দেখাতেও ভোলেননি বিশ্বজয়ী যুবারা। এ ছাড়া গলায় মেডেল ঝুলিয়ে ক্যামেরার সামনে ধরে নিজেরদের কৃতিত্বকেও জানান দেন তাঁরা।
আইসিসির ফেসবুকে এই ভিডিও প্রকাশ করার পরই তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেখানে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটভক্তদের প্রশংসায় মুখর বিশ্বজয়ীরা। নিজেদের দেশের পক্ষ থেকে তাঁদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন অনেকেই। সেখানে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক আকবরকে নেতৃত্বদানকারী সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মানছেন সবাই।
গতকাল রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ভারতকে বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।
ম্যাচের শুরু থেকেই উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রথমে বাংলাদেশের বোলাররা স্লেজিং করেছে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। এরপর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নামলে ভারতীয় বোলাররাও পাল্টা স্লেজিং করে। বাউন্সার বৃষ্টি তো ছিলই, বিমারও বেরিয়েছে ভারতীয় পেসারদের হাত থেকে।
এদিকে ম্যাচ শেষের ঘটনাটি নিয়ে ভারতীয়দের অভিযোগ, জেতার পর তাদের ঘিরে গালিগালাজ করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। একপর্যায়ে দুদলের একাধিক ক্রিকেটার একে অন্যের দিকে তেড়েও যান।
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে সংবাদমাধ্যমেও। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশকে জেতানো অধিনায়ক আকবর বলেন, ‘আমি বলব, যা হয়েছে, তা হওয়া কখনোই কাম্য ছিল না। যদিও কী হয়েছে, পুরোটা আমি দেখিনি। তবে আপনি জানেন, ফাইনালে অনেক সময় আবেগ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। ক্রিকেটে বাংলাদেশ-ভারত এখন বড় দ্বৈরথ। কিছু ক্রিকেটার হয়তো আবেগ ধরে রাখতে পারেনি। আমি বলব, কোনো পরিস্থিতিতেই এমন কিছু হওয়া উচিত নয়। প্রতিপক্ষকে আমাদের সম্মান করা উচিত, খেলাটাকেও সম্মান করা উচিত। কারণ ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। আমি আমার দলের হয়ে দুঃখপ্রকাশ করছি।’
এ ছাড়া অধিনায়ক সাফল্যের রহস্য জানিয়ে বলেন, “আমি এমন একজন মানুষ, যে সবকিছুই সহজভাবে নেয়। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে ব্যাট করার খুব একটা সুযোগ পাইনি। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। ব্যাটিংয়ে যখন নামি, একটা জুটির প্রয়োজন ছিল। আমার সঙ্গীকে বলেছিলাম, ‘আমাদের একটা জুটি গড়তে হবে, উইকেট হারানো যাবে না’। সহজ পরিকল্পনা ছিল। তাতে সফল হয়েছি।”
যুব বিশ্বকাপে সবচেয়ে শক্তিশালী দল ভারত। ১৩ বারের বিশ্বকাপে সাতবারই ফাইনাল খেলা দলটি যে বাংলাদেশকে ছাড় দেবে না, সেটা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন আকবর নিজেও, ‘আমরা জানতাম, ভারত এত সহজে ছেড়ে দেবে না। তারা খুবই চ্যালেঞ্জিং দল। রান কম হলেও আমরা জানতাম তাড়া করা কঠিন হবে।’