দক্ষিণ আফ্রিকাকে নতুন লজ্জা দিল অস্ট্রেলিয়া

Looks like you've blocked notifications!

বাঁহাতি স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগারের হ্যাটট্রিকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রেকর্ড হারের লজ্জা পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অ্যাস্টন অ্যাগার হ্যাটট্রিকসহ ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেন। আর তাঁর নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়া ১০৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এত বড় ব্যবধানে এর আগে কখনো হারের লজ্জা পায়নি প্রোটিয়ারা। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।

জোহানেসবার্গে টস জিতে প্রথমে বোল করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের প্রথম বলে চার মারলেও দ্বিতীয় বলেই ডেল স্টেইন বিদায় করে দেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে। ওয়ার্নারকে হারালেও, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে সময় নেয়নি অস্ট্রেলিয়া। আরেক ওপেনার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও সাবেক দলপতি স্টিভেন স্মিথ জুটি বেঁধে দলকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যান।

দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৪৮ বলে ৮০ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন ফিঞ্চ ও স্মিথ। রান তোলার গতি ছিল ওভারপ্রতি ১০ করে।

নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে খেলা ফেরার পথ দেখান চায়নাম্যান বোলার তাবরাইজ শামসি। ছটি চার ও একটি ছক্কায় ২৭ বলে ৪২ রান করা ফিঞ্চকে শিকার করেন শামসি।

অধিনায়কের বিদায়ে স্মিথের সাথে জুটির গড়েন ম্যাথু ওয়েড। এই জুটিও দ্রুততার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন। ২১ বলে ৩০ রান দলকে এনে দেন স্মিথ-ওয়েড। ১৮ রান করা ওয়েডকে থামিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্টেইন। কিছুক্ষণবাদে স্মিথেরও বিদায় নিশ্চিত করেন শামসি। এমন অবস্থায় ১১৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৩২ বলে ৪৫ রান করেন স্মিথ।

এ অবস্থায় পরের তিন ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শ ১৪ বলে ১৯, উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি ২২ বলে ২৭ ও আগার নয় বলে অপরাজিত ২০ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ১৯৬ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন। দক্ষিণ আফ্রিকার স্টেইন-শামসি দুটি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৯৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সাত ওভারের মধ্যে ৪২ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে প্রোটিয়ারা। এই পরিস্থিতি থেকে ঘুড়ে দাঁড়ানোর পরিকল্পনায় ছিলো স্বাগতিকরা।

কিন্তু অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বল হাতে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খাদের মধ্যে ফেলে দেন আগার। প্রথম তিন বল দুই রান দেন তিনি। পরের তিন বলে উইকেট তুলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন অ্যাগার। তার শিকার হন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস, আন্দিল ফেলুকুওয়াও ও স্টেইন। আর সেখানেই ম্যাচের ফলাফল নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৩ ওভারে ৮৯ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। পরবর্তী সময়ে আরো দুই উইকেট নিয়েছিলেন অ্যাগার। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ডু-প্লেসিস ২৪, কাগিসো রাবাদা ২২ ও ভ্যান বিয়র্ন ১৬ রান করেন।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৩তম ও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন অ্যাগার। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম হ্যাটট্রিকটি ছিল সাবেক ডান-হাতি পেসার ব্রেট লির। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাট্টিক করেছিলেন লি। সেটি ছিল টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে প্রথম হ্যাটট্রিক।

প্রথম ওভারে অ্যাগারের বোলিং ফিগার ছিল ১-০-২-৩। আর ম্যাচ শেষে অ্যাগারের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় চার ওভারে ২৪ রানে পাঁচ উইকেট। যা তাঁর ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ডও গড়েন অ্যাগার। আগের সেরা বোলিং ছিল বাঁ-হাতি পেসার জেমস ফকনারের। ২০১৬ সালের বিশ্বকাপে মোহালিতে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে চার ওভারে ২৭ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ফকনার। অস্ট্রেলিয়ার জয়ে বড় অবদান রাখায় ম্যাচসেরা হয়েছেন অ্যাগার।

আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আবারও মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া।