বাংলাদেশকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে ফাইনালে বুরুন্ডি

Looks like you've blocked notifications!

ম্যাচের বেশিরভাগ সময় বল ছিল বাংলাদেশের দখলে। বুরুন্ডির চেয়েও শটও বেশি নিয়েছে স্বাগতিকরা। কিন্তু রক্ষণে দুর্বল বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে গিয়ে বারবারই হতাশ করেছেন। সেই সুযোগে বুরুন্ডিকে পথ দেখান এনশিমিরিমানো জসপিন। ছন্দে থাকা এই ফরোয়ার্ড করেন টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। জসপিনের দিনে বাংলাদেশকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের ফাইনালে উঠেছে বুরুন্ডি।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে জোড়া গোলের নায়ক মতিন মিয়াকে হারায় বাংলাদেশ। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন মতিন। অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে হারিয়েও ম্যাচের শুরু থেকে দুর্দান্ত ছিল বাংলাদেশ।

প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই প্রতিপক্ষ শিবিরে তিনবার আক্রমণ করে স্বাগতিকরা। বড় সুযোগ আসে ষষ্ঠ মিনিটে। বুরুন্ডির ডি-বক্সে সুফিল বল বাড়ান ইব্রাহিমকে। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন ইব্রাহিম। উল্টো বল নিয়ে বাংলাদেশের ডি-বক্সে গিয়ে আক্রমণ করে অতিথিরা। তবে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার বাধা টপকে গোল আদায় করতে পারেনি বুরুন্ডি।

৩০ মিনিটে আরেকটি বড় সুযোগ পায় বাংলাদেশ। নিজেদের ডি-বক্সের বাইরে ফাউলকরে অতিথিরা। তাতে ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। কিন্তু দূরপাল্লার লম্বা ফ্রি কিকে বল ঠিকানায় পাঠাতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। পরের মিনিটে আবারও আক্রমণ। কিন্তু জামালের বাড়ানো ক্রসে হেড নিতে ব্যর্থ হন রিয়াদুল হাসান। দুই মিনিট বাদে আরো একবার ভক্তদের হতাশ করেন বাংলাদেশি ফুটবলাররা।

কিন্তু পুরো ম্যাচে আক্রমণাত্মক থাকা বাংলাদেশ বিরতির আগ মুহূর্তে গোল খেয়ে বসে। ৪৩ মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বল আলতো ছোঁয়ায় জালে পাঠিয়ে বুরুন্ডিকে এগিয়ে নেন জসপিন। তিন মিনিট বাদের আবারও জসপিনের গোলেই স্কোরলাইন ২-০ করে নেয় অতিথিরা।
প্রথমার্ধে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ বিরতির পর বেশ গুছানো ভাবে শুরু করে। কিন্তু আক্রমণে গিয়েই বারবার হতাশ করেন স্বাগতিকরা। ৪৮ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে সরাসরি বুরুন্ডির ডি-বক্সে চলে আসেন সাদ। কিন্তু বাকিদের মতো শট নিতে ব্যর্থ হন সাদও।

৬১ মিনিটে জামালের বাড়ানো বলে শট নেন সুফিল। কিন্তু বুরুন্ডির গোলরক্ষকের বাধা এড়িয়ে লক্ষ্যবেদ করতে পারেননি। দুই মিনিট বাদের আরেকবার হতাশ করেন সাদ। উল্টো ৭৯ মিনিটে নিজের তৃতীয় গোল করে হ্যাটট্রিক আদায় করে নেন জসপিন।

প্রথম ম্যাচে মরিশাসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন জসপিন। টুর্নামেন্টে এটি তাঁর সপ্তম গোল। তিন গোল খেয়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে ৩-০ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় জামাল-সাদদের।

চলতি টুর্নামেন্টে দারুণ খেলছে বরুন্ডি। নিজেদের প্রথম ম্যাচে মরিশাসকে ৪-১ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে সিশেলসকে হারায় ৩-১ গোলে। টানা জয়ে ‘বি’ গ্রুপের সেরা হয়ে সেমিফাইনালে ওঠে আফ্রিকার দেশটি। এবার স্বাগতিক বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট পেল বুরুন্ডি। শুধু তাই নয়, টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি গোল দেওয়া দলও হলো বুরুন্ডি।

ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোল করা খেলোয়াড়ও তাদের দলে। সেই তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা করুণ। চোটে জর্জরিত বাংলাদেশের শুরুটাই হয়েছে হার দিয়ে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় দিয়ে সেমিফাইনালের টিকেট পায় বাংলাদেশ। কিন্তু বুরুন্ডির কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় স্বাগতিকদের।