বিশ্বকাপের দ্রুততম গোলদাতা এখন উবার চালক

Looks like you've blocked notifications!

বিশ্বকাপের রেকর্ড গড়া ফুটবলার তিনি। মাত্র ১০.৮ সেকেন্ডে গোল করে এখনো তিনি বিশ্বকাপের দ্রুততম গোলদাতা। নাম-যশ সবই ছিল। কিন্তু রাজনীতিতে পা রেখে জীবনের সব হারিয়েছেন তুরস্কের কিংবদন্তি ফুটবলার হাকান সুকুর। তুরস্কের সেই হাকান সুকুর বর্তমানে উবার চালক। যুক্তরাষ্ট্রে উবারের ট্যাক্সি চালিয়ে কিংবা বই বিক্রি করেই এখন জীবন চালাচ্ছেন তুরস্কের এই সাবেক ফুটবলার।

ফুটবলের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ইন্টার মিলান, ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স, টোরিনো,  গ্যালাতাসারের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন হাকান। ক্লাব ফুটবলে আড়াইশর বেশি গোল তাঁর নামের পাশে। জাতীয় দলে তুরস্কের হয়েও ১১২ ম্যাচে করেছেন ৫১ গোল। ২০০২ বিশ্বকাপে সাউথ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর মাত্র ১০.৮ সেকেন্ডে গোল করে এখনো তিনি বিশ্বের দ্রুততম গোলদাতা।

কিন্তু সেই ফুটবলার হাকান মুদ্রার উল্টো পিঠও দেখেছেন। তুরস্কের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে নিজের সর্বনাশ নিজেই ডেকে এনেছেন হাকান। ২০১১ সালে তুরস্কের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল একেপি পার্টিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু দুই বছর না যেতেই প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় তাঁর। মূলত এরদোয়ানের সঙ্গে ঝামেলা হয় হাকানের কাছের মানুষ ফেতুল্লা গুলেনের। সেটার প্রতিবাদ করতে গিয়েই দেশছাড়া হন হাকান।

২০১৩ সালে রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করেন হাকান। কয়েক বছর পর এরদোয়ানের বিপক্ষে টুইট করলে ঝামেলা আরো বেড়ে যায়। তাতে জনগণের আস্থাও হারান হাকান। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের শত্রু হয়ে দেশ ছাড়তে হয় হাকানকে। পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই উবার চালিয়ে বর্তমানে জীবন চলছে এই ফুটবল তারকার।

স্পোর্টস বাইবেলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী হাকান জানান, বর্তমানে বেঁচে থাকার জন্য উবার চালাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ওরা আমার স্ত্রীর গায়ে পাথর ছুড়েছে, বাচ্চাদের রাস্তায় অপমান করেছে। যতবারই বিবৃতি দিয়েছি, ততবারই হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। যখন দেশ ছেড়ে এসেছি, আমার বাবাকে জেলে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমার যত সম্পত্তি ছিল, সব বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুনিয়ায় আর কিছুই বাকি নেই আমার। এরদোয়ান সব কেড়ে নিয়েছে। আমার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, কাজ করার অধিকার, কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।’

জীবনের কঠিন সময়ের ব্যাখ্যা দিয়ে সুকুর আরো বলেন, ‘ক্যালিফোর্নিয়ায় আমি একটা ক্যাফে দিয়েছিলাম। আচমকা কোথা যেন সব অচেনা লোক এসে ডোম্বরা সংগীত (তুরস্কের মানুষের প্রাণের সংগীত) বাজানো শুরু করল! সেটাও শেষ। এখন আমি উবারের গাড়ি চালাই আর বই বিক্রি করি।’