মাশরাফির নেতৃত্বে অন্যরকম শুরুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ

Looks like you've blocked notifications!

মিরপুরে শেরেবাংলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাদা পোশাকের লড়াই শেষ। ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বস্তি নিয়ে বাংলাদেশ দলের গন্তব্য এখন সিলেটে। চায়ের শহরে সফরকারীদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় দল।

সেই লক্ষ্যে আগামীকাল রোববার সফরকারীদের মুখোমুখি হবে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায়।

সিলেটে জিম্বাবুয়ের অন্যরকম এক পরীক্ষার সামনেই পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই হিসেবে সিরিজ শুরুর আগের দিনও নেই খেলার কোনো আলোচনা। নেই প্রতিপক্ষ নিয়ে কোনো বাড়তি চিন্তা। সিরিজের আগে মূহূর্তে যত উত্তাপ শুধু অধিনায়ক মাশরাফির অবসর নিয়ে। সেই উত্তাপ ছড়ালো ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনেও।      

এ সিরিজ দিয়ে দীর্ঘদিন পর ক্রিকেটে ফিরছেন মাশরাফি। দেশের হয়ে সর্বশেষ বিশ্বকাপে খেলেছেন মাশরাফি। ২০১৯ সালের ৫ জুলাই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর আর দেখা যায়নি তাঁকে। এ ছাড়া দেশের মাটিতে ১৫ মাস আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছেন ওয়ানডে অধিনায়ক।  সাত মাসের লম্বা বিরতি দিয়ে অধিনায়কের ফেরাটা স্বস্তির বটে। কিন্তু নানা বিতর্কে সেটা অনেকটা অস্বস্তির হয়েই দাঁড়িয়েছে। কারণ কদিন আগেই বিসিবি সভাপতি জানিয়েছিলেন, এটিই হতে যাচ্ছে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির শেষ সিরিজ। তা নিয়েই যত আলোচনা। তবে মাশরাফি জানিয়েছেন, নিজের অবসর ভাবনা নিয়ে কিছুই বলতে চাননা তিনি।

মাশরাফি বলেন, ‘সব তো বোর্ড সভাপতি বলেছেনই। আমার সঙ্গে কী কী কথা হয়েছে বোর্ড সভাপতির, আমার মনে হয় না, সেটা আপনাদেরকে বলার প্রয়োজন আছে। ক্রিকেট বোর্ড যেটা বলেছে আপনারা তো জানেনই। অতটুকুই তো যথেষ্ট। আমার মুখ থেকে আবার শুনতে হবে কেন? এটা আমার শেষ কি না সেটা জানি না। এটা নিয়ে বলার কিছু নাই। যদি থাকত বলার, অবশ্যই বলতাম। বোর্ড সভাপতি যেটা বলেছেন, আপনারা তো সেটা জেনেছেনই। আমার মুখ থেকে শোনার আর কী দরকার! ’

ক্রিকেটের লড়াইয়ে জিম্বাবুয়ে চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশ। গত সাত বছরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে কোনোটিতেই হারেনি লাল-সবুজের দল। তবে মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা জানালেন, কোনোভাবেই জিম্বাবুয়েকে ছোট করে দেখছেন না তিনি। বরং ছোট ফরম্যাটে জিম্বাবুয়েকে বেশ শক্তিশালী মানছেন স্বাগতিক অধিনায়ক।

আজ শনিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘ছোট ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ে বেশ শক্তিশালী। এই ফরম্যাটে তারা অনেক অভিজ্ঞ। অবশ্যই আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুতে চাই। কাল (রোববার) শুরু করছি। এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ম্যাচে খেলব। এটা বলা মুশকিল যে আমরা তিন ম্যাচেই জয় পাব। তবে জয় দিয়েই শুরু করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।’

সতীর্থদের সতর্ক করে মাশরাফি আরো বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের কাছে আমরা হারতেও পারি। এমন তো না যে আমরা জিম্বাবুয়ের কাছে আগে হারিনি! যে ম্যাচগুলো আমরা জিতেছি, এরমধ্যে কিন্তু দুই-তিনটি ছিল যে আমরা প্রায় হারা ম্যাচ জিতে গেছি। তার মানে, তারা আমাদের হারাতে পারে। সুতরাং অতটুকু নিশ্চিত হয়েই আমাদের ক্রিকেট খেলতে হবে।’

অবশ্য প্রতিপক্ষ হিসেবে দুর্বল হলেও ভাবছে না জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের স্পিন শক্তির বিপক্ষে লড়তে প্রস্তুতি সফরকারীরা। দলটির অধিনায়ক চামু চিবাবা বলেন, ‘বাংলাদেশ দল থেকে কী প্রত্যাশা করতে পারি সেটা নিয়ে আমরা নিজেরা আলোচনা করেছি। এটা স্পষ্ট, যখনই আমরা এখানে এসেছি প্রচুর স্পিনের মুখোমুখি হয়েছি। বাংলাদেশের স্পিন মোকাবেলা করতে অনেক কাজ করেছি। আমরা নিজেদের দক্ষতার উন্নতিও করছি। সবমিলিয়ে আমরা তৈরি।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। আশা ছাড়ছে না সফরকারীরাও। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি কে আসে সেটা সময় বলে দেবে। আপাতত চায়ের শহরে মাশরাফির নতুন ফেরাকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় ভক্তরা।

দুই দলের স্কোয়াড :

বাংলাদেশ ওয়ানডে দল : মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম, আল আমিন হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমান।

জিম্বাবুয়ের ওয়ানডে দল : চামু চিভাবা (অধিনায়ক), তিমিসেন মারুমা, সিকান্দার রাজা, ক্রেইগ আরভিন, তিনাশে কামুনহুকামওয়ি, ওয়েসলি মাসাভরে, ক্রিস্টোফার এমপোফু, টিনোতেন্দা মুতুমবোজি, কার্ল মুম্বা, রিচমন্ড মুতুম্বামি (উইকেটরক্ষক), আইনসলে এনদোভু, ব্রেন্ডান টেলর, ডোনাল্ড টিরিপানো, চার্লটন টিসুমা ও শন উইলিয়ামস।