সাকিবের লড়াইয়ের পরও হারল বাংলাদেশ
লক্ষ্যটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হতো ১৯৪ রান। এই রান তাড়া তো দূরে, খুব একটা লড়াইও জমাতে পারেনি বাংলাদেশ। উইকেটে লম্বা সময় থাকা সাকিব আল হাসান পারলেন না বাংলাদেশকে বাঁচাতে। টপ অর্ডারদের ব্যর্থতার দিনে পরাজয়ের হতাশায় ডুবল বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। তাই দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নিকোলাস পুরানের দল।
ডোমিনিকায় সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান সংগ্রহ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬১ রান করেছেন রভম্যান পাওয়েল।
উইন্ডসর পার্কে জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ১৫৮ রানে থামে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন সাকিব আল হাসান। ৫২ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল ৫ বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা।
সাকিব ছাড়া বাকিরা কেউই ব্যাটিংয়ে থিতু হতে পারেননি। শুরুতেই উইকেট বিলিয়ে দেন দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস। দ্বিতীয় ওভারেই দুজনকে হারায় বাংলাদেশ।
এরপর একে একে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান। এরপর উইকেটে সৈকতকে নিয়ে লড়েন সাকিব। কিন্তু তাঁর রান তোলার গতি পরে বাড়লেও শুরুতে ছিল মন্থর। এত বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের জন্য যা যথেষ্ট ছিল না। ফলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। সাকিবের সঙ্গে ১১ বলে ১৫ রান করেন সৈকত।
এর আগে টস হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে ভয়ংকর রূপ দেখানো কাইল মায়ার্সকে দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় করেন স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান। তরুণ এই অফ স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন মায়ার্স। তাঁকে ফাঁকি দিয়ে বল গিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। ৯ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান করেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার।
এরপর তিনে নামা শ্যামার ব্রুকসকে টিকতে দেননি সাকিব আল হাসান। আক্রমণে এসেই ব্রুকসকে থামান সাকিব। বাংলাদেশি তারকার বলে স্লগ সুইপ করে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন ব্রুকস। টাইমিং ঠিক হয়নি। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। নিজেদের প্রথম ওভারে এক উইকেট নিয়ে মাত্র ১ রান দেন সাকিব।
পাওয়ার প্লেতে এই দুই উইকেট নিয়ে ৪৬ রান দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু এর মধ্যেই থিতু হয়ে যান ক্যারিবীয় অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। ব্র্যান্ডন কিংয়ের সঙ্গে শক্ত জুটি গড়েন তিনি। এই জুটিতেই লড়াইয়ে ফেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দুজনে মিলে গড়েন ৫৬ বলে ৭৪ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত ১৩তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন সৈকত। বাংলাদেশি স্পিনারের ডেলিভারিতে রিভার্স সুইপের চেষ্টা করেন পুরান। কিন্তু ব্যাটে খেলতে পারেননি। এলবির আউট দেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। কিন্তু রক্ষা পাননি। ৩০ বলে ৩৪ রান করে ফেরেন তিনি।
অধিনায়ক ফিরলেও ব্র্যান্ডন কিংয়ের ব্যাটে ভোগে বাংলাদেশ। উইকেটে থেকে ক্যারিবীয়দের রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। শেষ দিকে চড়াও হন রভম্যান পাওয়েলও। সাকিবের এক ওভারেই পাওয়েল নেন ২৩ রান। এই দুজনের ব্যাটে চড়েই শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে শক্ত পুঁজি পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৫৭ রান করেন ব্র্যান্ড কিং। অন্যদিকে ঝড় তোলা পাওয়েল মাত্র ২০ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত করেন ২৮ বলে করেন ৬১ রান।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৪০ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। ৩৮ রান দিয়ে এক উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। সমান একটি করে নেন সৈকত ও মেহেদী হাসান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ (কিং ৫৭, মায়ার্স ১৭, ব্রুকস ০, পুরান ৩৪, পাওয়েল ৬১*, শেফার্ড ৩, স্মিথ ১১* ; তাসকিন ৩-০-৪৬-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৬-০, সাকিব ৪-০-৩৮-১, শরিফুল ৪-০-৪০-২, সৈকত ১-১-০-০)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৮/৬ (এনামুল ৩, লিটন ৫, সাকিব ৬৮*, মাহমুদউল্লাহ ১১, আফিফ ৩৪, সোহান ৭, সৈকত ১৫, মেহেদি ৫*; আকিল ৪-০-২৭-১, ম্যাককয় ৪-০-৩৭-২, স্মিথ ৩-০-৩২-১, শেফার্ড ৪-০-২৮-২, পল ১-০-৯-০, ওয়ালশ জুনিয়র ৪-০-২৩-০)।
ফল : ৩৫ রানে হারল বাংলাদেশ।