সাকিব হতে চায় ভাইরাল ‘সাদিদ’

Looks like you've blocked notifications!
লেগ স্পিন আর গুগলি বল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বরিশাল নগরীর ছয় বছরের শিশু আসাদুজ্জামান সাদিদ। ছবি : এনটিভি

লেগ স্পিন আর গুগলি বল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে আসাদুজ্জামান সাদিদ নামের ছয় বছরের এক শিশু। বরিশাল নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও উলালঘুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র সে।

সাদিদের করা বোলিং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর, সেই ভিডিও ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেছেন ক্রিকেট ঈশ্বর খ্যাত শচীন টেন্ডুলকার। শচীন টেন্ডুলকার ওই শিশুর বোলিং ভিডিও পোস্ট করার পর মুহূর্তেই সেটি ছড়িয়ে পড়ে কোটি কোটি মানুষের কাছে। প্রশংসায় ভাসছে খুদে সাদিদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাদিদকে উন্নত মানের ট্রেনিং দেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে, যাতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ভবিষ্যতে খেলতে পারে সে।

আজ শুক্রবার সকালে কথা হয় শিশু আসাদুজ্জামান সাদিদের সঙ্গে। সে এক নিশ্বাসে বলেছে বিশ্বসেরা তার আইডল ক্রিকেটারদের নাম। ছোট্ট এই শিশু শুধু লেগ স্পিন বা গুগলি নয়, ব্যাটিংও করে দুর্দান্ত। তার ট্রেইনার মামা শুভ ঠিক যেভাবে বলছেন সেভাবেই ব্যাটিং করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে শিশু সাদিদ।

সাদিদ জানায়, তার পছন্দের ক্রিকেটারদের তালিকায় আছেন শেন ওয়ার্ন ও রাশিদ খানের মতো লেগস্পিনাররা।

সাদিদ বলে, ‘আমার ভিডিও যে সবাই দেখছে, এটা কখনও ভেবে দেখিনি। আমার খুব ভালো লাগছে।’

‘সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে শেন ওয়ার্ন ও রাশিদ খানকে। এই দুজনকে দেখে আমি শিখেছি। এ ছাড়া অ্যাডাম জ্যাম্পা, বিরাট কোহলি, সাকিব আল হাসান, রোহিত শর্মা, এবি ডি ভিলিয়ার্স, রবীন্দ্র জাদেজা, মহেন্দ্র সিং ধোনি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ভালো লাগে। ম্যাক্সওয়েলকে দেখে আমি ডিফেন্স করা শিখেছি।’

সবার কাছে এখন সাদিদ পরিচিত খুদে লেগস্পিনার হিসেবে। তবে তার শুরুটা ব্যাটসম্যান হিসেবে। সাদিদের মামা সিরাজুল ইসলাম শুভই তার ক্রিকেট খেলার সঙ্গী ও গুরু।

শুভ জানান সাদিদের বোলার হয়ে ওঠার গল্প। সেটার পেছনেও হাত রয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের।

শুভ বলেন, ‘সাদিদ অনেক ছোট থেকে ক্রিকেট খেলে। তিন বছর বয়স থেকে। প্রচুর খেলাও দেখে। একদিন বাংলাদেশের খেলায় সাকিব ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ায় সাদিদ জানতে চায় সাকিব বেশি রান করেনি তাও ম্যান অব দ্য ম্যাচ কেন হয়েছে?

‘আমি তাকে বলি, সাকিব ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংও করে। তখন সাদিদও বলে তাকে বোলিং শেখাতে।’

শুভ আরও জানান, বছর দেড়েক সাদিদ ঘরের ভেতরেই ক্রিকেট খেলেছে মহামারির কারণে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে বাইরে খেলা শুরু করেছে।

ক্লাস ওয়ানের ছাত্র সাদিদের ইচ্ছে জাতীয় দলে খেলার। লেগস্পিন বোলিং কীভাবে করে, সেটার খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা করতে করতে সে জানায়, ‘আমি বড় হয়ে সাকিব আল হাসানের মতো হতে চাই।’

এলাকার সবাই সাদিদকে ক্রিকেট খেলায় সাহায্য করেন বলে জানান শুভ। ভাগ্নের বোলিংয়ের ভিডিও তেমন কিছু না ভেবেই ফেসবুকে আপলোড দিয়েছিলেন তিনি। সেটা নিয়ে যে এমন ঝড় শুরু হয়ে যাবে এবং পৌঁছে যাবে বিশ্ব দরবারে; সেটা তাদের কাছে কল্পনারও বাইরে ছিল।

পরিবারের স্বপ্ন, সাদিদ বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করবে একদিন।

শুভ আরও বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছে হচ্ছে ও যখন ক্লাস সেভেন উঠবে তখন বিকেএসপিতে ভর্তি করানো। আর যদি সুযোগ হয় তাহলে সাকিব আল হাসানের অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করানো। আমরা চাই সাদিদ যেন সঠিক পরিচর্যা পায় ও তার প্রতিভা যেন হারিয়ে না যায়।

‘বাংলাদেশে ভালো লেগস্পিনার নেই। আমার বিশ্বাস সাদিদের যদি যত্ন নেওয়া হয় তাহলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ভালো একজন লেগস্পিনার পাবে।’

যেমনটা প্রতিভা সাদিদের, সেটাকে পরিচর্যা করতে পারলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলকে সার্ভিস দেওয়ার মতো একজন ক্রিকেটার তৈরি হতে পারে—এমনটা বিশ্বাস সাদিদের পরিবার, সতীর্থ ও প্রতিবেশীদের।