৯ বছর পর শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের মেয়েদের জয়
টি-টোয়েন্টিতে শেষের আগে শেষ বলে কিছু নেই। যেমন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ওভারে ৩৫ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। এমন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বের করা বেশ কঠিন। তবে এই কঠিন কাজটাকেই সহজ করে দেখাল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। নিগার সুলতানা ও রিতু মণির ব্যাটে শ্রীলঙ্কায় ছয় উইকেটে জিতল বাংলাদেশের মেয়েরা।
এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ নারী দলের সর্বশেষ জয় ছিল ২০১৪ সালে। সেটি ছিল ঘরের মাঠে ক্ষুদ্র সংস্করণের বিশ্বকাপে। ৯ বছর পর আবারও তাদের বিপক্ষে জয় পেল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে এই জয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে পাওয়া জয়। ইতিহাস গড়েই জয় তুলে নিল বাংলার মেয়েরা।
শ্রীলঙ্কা সফরে ওয়ানডে সিরিজটা ভুলে যাওয়ার মতোই কেটেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের জন্য। তিন ম্যাচ সিরিজের দুটি বৃষ্টিতে পণ্ড, শেষ ম্যাচে হার ৫৮ রানে। ওয়ানডে সিরিজের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগেও শঙ্কা ছিল বৃষ্টির। কিন্তু এদিন মাঠে গড়িয়েছে খেলা এবং ম্যাচ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাব দিতে নেমে ১৯.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১৪৬ রান তোলে বাংলার মেয়েরা।
ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি লঙ্কানদের। দলীয় ১৬ রানেই আউট হন ওপেনার ভিষমি গুণারত্নে। তাকে রাবেয়া খানের ক্যাচ বানান ফারিহা তৃষ্ণা। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু ও হার্শিতা চামারাবিক্রম মিলে ৪৮ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। ২৮ বলে ৩৮ রান করে নাহিদা আক্তারের শিকারে পরিণত হন আতাপাত্তু। ৪৪ বলে ৪৫ রান করা সামারাকে সাজঘরে ফেরান সুলতানা খাতুন।
১৭ তম ওভারে পরপর দুই বলে হাসিনি পেরেরা ও কাভিশ দিলারিকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের অল্প রানে বেঁধে ফেলার অন্যতম কারিগর ফাহিমা খাতুন। শেষ দিকে নিলাক্ষি ডি সিলভার ২৮ বলে অপরাজিত ২৯ রানে শ্রীলঙ্কা পায় ১৪৫ রানের সংগ্রহ।
বাংলাদেশের পক্ষে দুই উইকেট নেন ফাহিমা। সমান একটি করে উইকেট পান ফারিহা, নাহিদা, সুলতানা ও রাবেয়া।
জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশেরও। দলীয় ৭ রানে আউট হন ওপেনার শারমিন সুলতানা(৫)। ৯ রান করে দলীয় ২৩ রানে আউট হন আরেক ওপেনার রুবাইয়া হায়দার। তৃতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও সোবহানা মুস্তারি মিলে ৫১ রান জমা করেন স্কোরবোর্ডে। ১৭ রান করে মোস্তারি ফিরে গেলে ক্রিজে আসেন রিতু মণি। তাকে নিয়ে ৭১ রানের জুটি গড়েন জ্যোতি।
ফলে শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৮ রানে। প্রথম বলে চার মেরে ম্যাচ সহজ করে নেন রিতু। দুই বল বাকি থাকতে ২৩ বলে ৩৩ রান করে রিতু আউট হলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন জ্যোতি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫১ বলে ৭৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন তিনি। ৭ চার ও ২ ছয়ে সাজানো ইনিংসটিতে ভর দিয়ে বাংলাদেশ পায় ৬ উইকেটের ইতিহাস গড়া জয়।