উরুগুয়ের বিশ্বকাপ জয়ের নায়কের জীবনাবসান
আলসিদেস ঘিগ্গিয়া—নামটা উচ্চারিত হলে ফুটবলপ্রেমীরা এক ধাক্কায় ফিরে যান ৬৫ বছর আগে, ১৯৫০ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে। ব্রাজিলিয়ানরা তো তাঁকে কোনো দিনই ভুলতে পারবে না। স্বাগতিকদের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে উরুগুয়ের জয়সূচক গোলটি যে তাঁরই ছিল। উরুগুয়েকে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা এনে দেওয়া ঘিগ্গিয়া আর নেই। সেই ম্যাচের ঠিক ৬৫ বছর পর, বৃহস্পতিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।
ঘিগ্গিয়ার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। বার্তাসংস্থা এএফপিকে মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্ত্রী বেয়াত্রিজ। ঘিগ্গিয়াই ছিলেন উরুগুয়ের সেই বিশ্বকাপজয়ী দলের সর্বশেষ জীবিত সদস্য।
১৯৫০ সালের ১৬ জুলাই বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। সেবার ফাইনাল হয়নি, গ্রুপ পর্ব শেষে চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ পেয়েছিল চারটি দল। শেষ ম্যাচে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত ব্রাজিল। স্বদেশের বিজয়োৎসবে অংশ নিতে সেদিন মারাকানা ভেঙে পড়ার জোগাড়।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, গ্যালারিতে ছিল প্রায় দুই লাখ মানুষের ভিড়! ব্রাজিলিয়ানদের উল্লাসে ভাসিয়ে ৪৭ মিনিটে স্বাগতিক দলকে এগিয়ে দেন ফ্রিয়াকা। ৬৬ মিনিটে হুয়ান শিয়াফিনো সমতা ফেরালেও ব্রাজিলের ফুটবল-পাগল মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু ৭৯ মিনিটে সেই আশায় জল ঢেলে, মারাকানাকে স্তব্ধ করে উরুগুয়েকে এগিয়ে দেন ঘিগ্গিয়া।
সেই গোল আর শোধ করতে পারেনি ব্রাজিল। ব্রাজিলের ফুটবল-ইতিহাসের এক দুঃখজনক অধ্যায়ে পরিণত ম্যাচটির নাম হয়ে যায় ‘মারাকানাজো’। আর ১৯৫০ বিশ্বকাপে ব্রাজিল-বধের সঙ্গে জড়িয়ে যায় ঘিগ্গিয়ার নাম।
পরবর্তী সময়ে এই রাইট উইঙ্গারকে বহু বার ‘মারাকানাজো’ নিয়ে কথা বলতে হয়েছে। বলা যায় তাঁর সাক্ষাৎকারের বড় অংশ জুড়েই থাকত ৬৫ বছর আগের সেই ম্যাচের প্রসঙ্গ। ব্রাজিলের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া তেমনই এক সাক্ষাৎকারে ঘিগ্গিয়ার অমর উক্তি, ‘আজ পর্যন্ত মাত্র তিন জন ব্যক্তি মারাকানাকে স্তব্ধ করতে পেরেছেন—পোপ, ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রা আর আমি!’