অনন্য কীর্তিতে ভাস্বর মুস্তাফিজ
ওয়ানডে অভিষেকেই দারুণ সাফল্য। গত মাসে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে শুধু ম্যাচসেরাই হননি, নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। ওয়ানডেতে প্রথম দুই ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে একটা রেকর্ডও গড়েছিলেন বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এবার আরেকটি কীর্তিতে ধন্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন ‘সেনসেশন’। ওয়ানডের পর টেস্ট অভিষেকেও ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন তিনি। আজ পর্যন্ত আর কোনো ক্রিকেটার যে কীর্তি গড়তে পারেননি।
মুস্তাফিজসহ ১০০ জন ক্রিকেটার টেস্ট অথবা ওয়ানডে অভিষেকে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন। তবে দুই ফরম্যাটে শুরুতেই ম্যাচসেরা হওয়ার কৃতিত্ব শুধুই সাতক্ষীরার ১৯ বছরের এই প্রতিভাবান পেসারের।
টেস্ট ক্রিকেটে এর আগে তিনজন বাংলাদেশি অভিষেকেই ম্যাচসেরা হয়েছিলেন। তাঁরা হলেন জাভেদ ওমর, মোহাম্মদ আশরাফুল ও ইলিয়াস সানি।
২০০১ সালের এপ্রিলে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে দুই ইনিংসে ফিফটি করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন জাভেদ। সেই বছরের সেপ্টেম্বরে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরি করে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন আশরাফুল। ইলিয়াস সানির কৃতিত্বটা মুস্তাফিজের মতো চট্টগ্রামেই, ২০১১ সালের অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস ২৪৮ রান গুঁড়িয়ে দিতে মুস্তাফিজের সবচেয়ে বড় অবদান। এক ওভারে তিনটিসহ মাত্র ৩৭ রানের বিনিময়ে তাঁর শিকার চার উইকেট। বৃষ্টিতে প্রায় অর্ধেক সময় ভেসে যাওয়া চট্টগ্রাম টেস্টে তাই তিনিই সেরা খেলোয়াড়।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম দলের নতুন তারকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর মুস্তাফিজ-বন্দনা, ‘টেস্ট ক্রিকেটে একজন পেসারের পক্ষে ভালো করা বেশ কঠিন। উইকেট স্লো হলে ভালো করা তো ভীষণ দুরূহ। চট্টগ্রামে এমন উইকেটে মুস্তাফিজের পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসনীয়। আশা করি ঢাকায় শেষ টেস্টেও সে ভালো করবে।’
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে আমলা-ডুমিনি-ডি কককে ফিরিয়ে দেওয়া সেই অসাধারণ ওভার যেন এখনো স্বপ্নের মায়াঞ্জন পরিয়ে রেখেছে মুশফিকের চোখে, ‘আমার টেস্টে ক্যারিয়ারে এমন স্পেল খুব কমই দেখেছি। মাঠে থেকে নিজ দলের বোলারের এমন বিধ্বংসী স্পেল আগে কখনো দেখিনি। সেই ওভারে কী অসাধারণ বলই না করেছে মুস্তাফিজ!’