স্পন্সরশিপ বিক্রি থেকে বিসিবির মোটা অঙ্কের আয়

Looks like you've blocked notifications!

আইসিসির দুটি বড় ইভেন্টই নয়, তিনটি এশিয়া কাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তহবিল হয়ে উঠেছে অনেক সমৃদ্ধ। গত সাত বছরে বাংলাদেশ সফরে ভারত এসেছে তিনবার। এ সময়ে ধোনি-কোহলিরা একটি ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্ট ছাড়াও দুটি ওয়ানডে সিরিজ ও এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছে। সে কারণেই গত সাত বছরে বাংলাদেশের মাটিতে ঘরোয়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট থেকে আয়ের অঙ্কটা প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে!

এই খাত থেকে বিসিবির আয় মোট ৭৬৯ কোটি ৭৩ লাখ ৮০ হাজার ৭৩৪ টাকা! ঘরের মাঠে (২০১০-১১ মৌসুমে) আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট থেকে বিসিবি আয় করেছে ১৯২ কোটি ২০ লাখ ১৭ হাজার ৬৯২ টাকা! এর পর ২০১৩-১৪ মৌসুমে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট থেকে বিসিবির আয় ১৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৩ টাকা! ২০১১-১২ অর্থবছরে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ক্রিকেট থেকেও আয়ের অঙ্কটা কম নয়, ৩৬ কোটি আট লাখ ২১ হাজার ৭৮০ টাকা।

আইসিসির পরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আয়ের খাত এখন টিম স্পন্সরশিপস্বত্ব। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্সের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় গত সাতটি অর্থবছরে টিম স্পন্সরশিপ খাত থেকে বিসিবি আয় করেছে ১০৭ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বাজারমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাহারা। ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ অর্থবছরে যেখানে টিম স্পন্সরশিপ খাতে গ্রামীণফোনের অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ছয় কোটি ২৫ লাখ টাকা, সেখানে চার বছরে রেকর্ড ৯৪ লাখ মার্কিন ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৫ কোটি ২০ লাখ টাকা) বিসিবির সঙ্গে সাহারার চুক্তি বিস্ময়ের চেয়েও বড় কিছু। আর্থিক সংকটের কারণে মেয়াদের পুরোটা পার করতে পারেনি সাহারা। বাধ্য হয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮ মাস আগে স্পন্সরশিপ প্রত্যাহার করে নিয়েছে তারা। তবে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেনি প্রতিষ্ঠানটি, কড়ায়-গণ্ডায় হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছে তারা বিসিবিকে। তাদের এজেন্ট অ্যামবেভেলির মাধ্যমে টিম স্পন্সরশিপ স্বত্বের বিপরীতে দুই বছর ছয় মাসে সাহারার অর্থায়নের পরিমাণ ৫৮ কোটি ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা বুঝিয়ে দিয়েছে বিসিবিকে। এই আট বছরে শুধু চুক্তিবদ্ধ টিম স্পন্সর রাইটসই নয়, ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত টি২০ বিশ্বকাপের মতো মেগা আসরেও টিম স্পন্সরশিপ থেকে মোটা অঙ্কের আয় করেছে বিসিবি।

বিসিবির চলমান নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ তাদের মেয়াদকালে টপ অব মাইন্ডের কাছে ৪১ কোটি টাকায় বিক্রি করেছে টিম স্পন্সরশিপ রাইটস। তাদের হাত থেকে হাতবদল হয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম স্পন্সরশিপস্বত্ব পেয়েছে রবি। সাহারা চুক্তি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও কোনো সংকটে পড়তে হয়নি বিসিবিকে। উন্মুক্ত বিডে টপ অব মাইন্ডের কাছে টিম স্পন্সরশিপ রাইটস বিক্রি করে গত দুই বছর ছয় মাসে বিসিবি এই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পেয়েছে ৪২ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৭ টাকা।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ইমেজ বৃদ্ধির প্রতিফলন চুক্তিতে পড়েছে বলে মনে করছেন বিসিবির পরিচালক ও অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান আফজালুর রহমান সিনহা। তিনি বলেন, ‘উন্মুক্ত বিডে টিম স্পন্সরশিপ রাইটস বিক্রিতে আমরা যে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করেছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা পাচ্ছি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বাজারমূল্য বেড়ে গেছে বলে এটা সম্ভব হয়েছে।’