হকির ‘বিদ্রোহী’দের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
হকিতে দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা চলছে। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহর কমিটির অধীনে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নারাজ মোহামেডানসহ বেশ কয়েকটি ক্লাব। ‘বিদ্রোহী’ ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথা বলে সমাধানের পথ বের করতে ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় বর্তমান সহসভাপতি রশিদ শিকদারকে দায়িত্ব দিয়েছেন। গত ১২ আগস্ট রাজধানীর এক হোটেলে খেলতে অনাগ্রহী ক্লাবগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রশিদ শিকদার। তবে সেই বৈঠক থেকে কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। মোহামেডানের নেতৃত্বে চারটি ক্লাবের কর্মকর্তারা খাজা রহমতউল্লাহর পদত্যাগের দাবি থেকে এখনো সরে আসেননি। তাঁদের দাবি, ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি ‘অবৈধ’। তবে এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক উল্টো নিজেকে সফল বলে দাবি করছেন।
বুধবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে খাজা রহমতউল্লাহ বলেন, ‘১২ আগস্টের সভায় অনেকেই আমার পদত্যাগ দাবি করেছেন। তবে আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করতে পারেননি। আমি সারা বছর খেলা মাঠে রেখেছি। এটাই কি আমার অপরাধ?’
‘বিদ্রোহী’দের প্রতি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তাঁর ঘোষণা, ‘প্রায় সাড়ে তিন বছরের মেয়াদে আমাদের কমিটি ৫০টির মতো টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি হকিকে মাঠে রাখতে। তবে আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা হকির স্বার্থবিরোধী কোনো কিছুর সঙ্গে জড়ানোর প্রমাণ দিতে পারলে আমি সরে দাঁড়াব।’
অবশ্য তাঁর পদত্যাগের ফলে সমাধানের পথ প্রশস্ত হবে না বলেই খাজা রহমতউল্লাহর বিশ্বাস, ‘আমার একার পদত্যাগে কোনো সমাধান হবে বলে মনে হয় না। বরং আরো জটিলাবস্থা তৈরি হবে। তখন হয়তো আরেকটি ক্লাব বলবে আমরাও নতুন কমিটির অধীনে খেলব না। এভাবে চলতে থাকলে হকির পরিণতি আরো খারাপের দিকেই যাবে।’
সব বিদ্বেষ-ভেদাভেদ ভুলে হকির স্বার্থে সবাইকে প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আবারও বলব হকির স্বার্থে আপনারা খেলায় আসুন। আমরা সর্বোচ্চ ছাড় দেব। সহসভাপতিসহ কয়েকটি পদ খালি আছে। সবাই রাজি থাকলে আমরা সেসব শূন্য পদে বিদ্রোহী ক্লাবগুলোর কর্মকর্তাদের বসাতে চাই।’
তবে সাধারণ সম্পাদকের আহ্বানে ‘বিদ্রোহী’দের সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা কমই বলা যায় এখন। মোহামেডান, মেরিনার ইয়াংস, ওয়ারী ও বাংলাদেশ স্পোর্টিং ক্লাব অনেক দিন ধরেই না খেলার সিদ্ধান্তে অনড়। এখন তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ঊষা ক্রীড়া চক্র আর ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবও। অর্থাৎ ‘বিদ্রোহী’ ক্লাবের সংখ্যা চার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয়টিতে।
এই ছয়টি ক্লাবকে ছাড়া প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন সম্ভব কি না-এমন প্রশ্নে খাজা রহমউল্লাহ বলেন, ‘হকি ফেডারেশনের পরবর্তী সভায় লিগ কবে থেকে শুরু করা যায়, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করব। আমরা সবাইকে নিয়েই লিগ শুরু করতে চাই। প্রয়োজনে তাদের জন্য আমরা আরো অপেক্ষা করব। তবে কোনো দল অংশ নিতে না চাইলে তাদের ছাড়াই লিগ শুরু করব। সেই দলের বিরুদ্ধে বাইলজ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’