ইনিয়েস্তার কান্নাভেজা বিদায়
ঘোষণাটা আসারই ছিল। তবে এত দ্রুত যে আসবে সেটা বোধ হয় কারো ভাবনায়ই ছিল না। বার্সেলোনার প্রতিশব্দ হয়ে যাওয়া ক্লাবটির অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা জানিয়ে দিলেন বিদায়। বার্সায় ২২ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণার দিন ‘আবেগী’ ইনিয়েস্তার দেখা মিলল ন্যু-ক্যাম্পের সংবাদ সম্মেলনে।
চলতি মৌসুম শেষেই তুলে রাখছেন বার্সার জার্সি। নিজের ক্লাবেই সংবাদ সম্মেলনে সতীর্থদের উপস্থিতিতেই স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার জানিয়েছেন খবরটা। সেখানে বার্সা দলপতির সতীর্থদের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ক্লাবটির সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তামেউ ও কোচ আরনেস্তো ভালভার্দে।
বিদায়ের ঘোষণা দেওয়াটা কষ্টের, সেখানে বার্সাতো ইনিয়েস্তার জন্য অন্যরকম কিছু। ১৬ মৌসুম মাঠ দাপিয়ে এবার ছেড়ে যাওয়ার কথাটা বলার সময় তাই আবেগটা আর সামলে নিতে পারেননি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বার্সার মাঝমাঠ সামলানো এই বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার।
কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ইনিয়েস্তা বলেন, ‘এখানে এসে বিদায় বলার দিনটা আমার জন্য খুব কঠিন। আমি আমার পুরো জীবনটাই এখানে কাটিয়েছি। আজ আমি যা তাঁর সব কৃতিত্বই বার্সা আর লা-মাসিয়ার। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
বার্সা দলপতি অবশ্য ন্যু-ক্যাম্প ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছেন কোথায়, সে ব্যাপারে জানাননি কিছুই। তবে জানিয়েছেন বার্সার বিপক্ষে মাঠে নামছেন না তিনি। এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমি অনেক আগেই বলেছিলাম বার্সার বিপক্ষে মাঠে নামব না আমি। তাই অবশ্যই ইউরোপের বাইরের কোনো ক্লাবে যাচ্ছি। তবে এখনো অনেক কথা বলার বাকি আছে। মৌসুম শেষেই সবাই এ ব্যাপারে জানতে পারবে।’
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ‘ভালো মানুষ’ বলেই পরিচিত ইনিয়েস্তা ভক্তদের হৃদয়ে থাকতে চান সেভাবেই, ‘একজন ভালো মানুষ, একই সঙ্গে ভালো একজন ফুটবলার হিসেবে আমি স্মরণীয় থাকতে চাই। কেননা দিন শেষে আমাদের পরিচয় শুধুই একজন মানুষ।’
বার্সেলোনার জার্সিতে সব মিলিয়ে ৬৬৯ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন ইনিয়েস্তা। গোল করেছেন ৬৯টি, শিরোপা জিতেছেন ৩১টি। এর মধ্যে লা-লিগা শিরোপা জিতেছেন চারটি, চ্যাম্পিয়নস লিগের ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছেন চারবার।
জাতীয় দল স্পেনের হয়েও দুর্দান্ত ছিলেন ইনিয়েস্তা। ২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালে তাঁর দেওয়া গোলেই স্পেন জিতেছিল বিশ্বসেরার মুকুট। ১২৫ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন স্পেনের হয়ে, গোল করেছেন ১৩টি। ২০০৮ ও ২০১২ তে জিতেছিলেন ইউরো কাপ। আসছে ২০১৮ বিশ্বকাপেও স্পেনের জার্সিতে দেখা মিলতে পারে তাঁর।