১৯৫০ বিশ্বকাপ

যুদ্ধের ডামাডোল শেষে উরুগুয়ের শিরোপা পুনরুদ্ধার

Looks like you've blocked notifications!
বিশ্বকাপের মঞ্চে ফিরেই উরুগুয়ে পুনরুদ্ধার করল শিরোপা।

দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসর ফুটবল বিশ্বকাপ। আর মাত্র ২৬ দিন পরই পুরো বিশ্ব মেতে উঠতে যাচ্ছে ফুটবলের উন্মাদনায়, যার আঁচটা পাওয়া যাচ্ছে এখন থেকেই। ফুটবল বিশ্বকাপ সামনে রেখে এনটিভি অনলাইনও নিয়ে এসেছে বিশেষ আয়োজন। আজ পাঠকদের সামনে হাজির করা হচ্ছে চতুর্থ বিশ্বকাপের গল্প। ১৯৫০ সালে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের চতুর্থ আসরের অনেক অজানা কথা নিয়ে থাকছে আজকের প্রতিবেদন :

হুট করেই ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপ থেকে সোজা ১৯৫০ সালে কেন? উত্তরটা সরল, মাঝে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে আয়োজিত হয়নি দুটি আসর। ১৯৪২ ও ১৯৪৬ সালে তাই মাঠেই গড়ায়নি বিশ্বকাপ ফুটবল। ১৯৫০ সালে তাই এক যুগ পর ফের বসে ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতার চতুর্থ আসরটি। এই আসর দিয়েই দুই আসর আর ২০ বছর পর বিশ্বকাপের মঞ্চে ফেরে উরুগুয়ে। ভোজবাজির মতো করেই যেন প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা ফের মাথায় পরে বিশ্বসেরার মুকুটটা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতায় যুদ্ধ শেষে ইউরোপ যেন পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে। তাই ফিফাকে বেছে নিতে হয়েছিল নতুন কোনো ভেন্যু। ১৯৪৬ সালে ব্রাজিল প্রস্তাব দিয়েছিল ১৯৪৯ সালেই বিশ্বকাপ আয়োজন করতে প্রস্তুত তারা। সালটা বদলেছিল তবে বদলায়নি বিশ্বকাপের ভেন্যু।

সাম্বার দেশের ছয়টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় ২৩ ম্যাচের চতুর্থ আসর। ব্রাজিলের মাঠে প্রথম বিশ্বকাপে মোট ২৩ দিন ধরে চলেছিল। তখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিদিন মাঠে বিশ্বকাপ ফুটবল হওয়ার রেকর্ড ছিল এটাই।

এই আসরেও ১৬ দল নিয়েই আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ফিফা। অবশ্য জাপান ও জার্মানির নামে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছিল বলেই ফিফা আমন্ত্রণ জানায় ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ডসহ কয়েকটি দলকে। আশ্চর্য হলেও সত্য এ তালিকায় ছিল ভারতও! তবে ভারত ও স্কটল্যান্ড শেষমেশ অংশ নেয়নি, সঙ্গে ছিল না ফ্রান্সও। এই বিশ্বকাপ দিয়েই ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো অংশ নেয় বিশ্বকাপে।

১৯৫০ বিশ্বকাপের বল ‘সুপারবল ডুপলো-টি’!

আগের আসরের শিরোপাধারী দল ইতালিকে ছাড়াই মাঠে গড়ায় ব্রাজিল বিশ্বকাপ, ১৩ দল নিয়ে চারটি গ্রুপ তৈরি করে শুরু হয় চতুর্থ বিশ্বকাপের লড়াই। প্রথম দুই গ্রুপে চার দল করে থাকলে তৃতীয় গ্রুপে ছিল চার দল আর শেষ গ্রুপে ছিল দল। উরুগুয়ে, ব্রাজিল, চিলি আর যুক্তরাষ্ট্র গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোলেও ফুটবলের জনক ইংল্যান্ড ছিটকে গিয়েছিল প্রথম পর্ব থেকেই। এই বিশ্বকাপ অবশ্য ছিল দুই পর্বেরই।

দ্বিতীয় পর্বে ফের চার দলের একটি গ্রুপ করে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে মাঠের লড়াইয়ে অংশ নেয় দলগুলো। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা দল জেতে নেবে বিশ্বকাপ, এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে এই পর্বের শেষ ম্যাচে রিও ডি জেনেরিওর মাঠে নামে স্বাগতিক ব্রাজিল ও উরুগুয়ে।

ঘরের মাঠে প্রথম বিশ্বকাপ। ব্রাজিলের সব মানুষ যেন সেদিন ছুটছিল মারাকানা স্টেডিয়ামে। ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৪ জন মাঠে বসে দেখেছিল ফাইনাল ম্যাচ। তবে প্রায় দুই লাখ দর্শকের সামনে সেলেসাওদের মাঠের প্রথম বিশ্বকাপটা তাদের জিততে দেয়নি উরুগুয়ে। ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতে দ্বিতীয় বিশ্বকাপের শিরোপাটাও বগলদাবা করেই বাড়ি ফেরে বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়নরা।