ডোপ কেলেঙ্কারির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলেন বিশ্বকাপে
দীর্ঘ তিন যুগ পর রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকেট পেয়েছে পেরু। স্বাভাবিকভাবেই লাতিন আমেরিকার দেশটি বেশ উৎফুল্ল। কিন্তু তাদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছিল। কারণ, যাঁর হাত ধরে দেশটির এই সাফল্য, সেই পেরুর অধিনায়ক দলের অন্যতম সেরা তারকা জস পাওলো গুয়েরেরো গঞ্জালেস এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ডোপ কেলেঙ্কারিতে। তবে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এবার ফিরে এসেছেন পেরুর এই তারকা। পেরুর মূল দলে জায়গা নিয়েই রাশিয়ায় দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন ৩৪ বছর বয়সী এই তারকা।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে। ওই সময়ে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে পানীয়র সঙ্গে কোকেন মিশিয়ে খাওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। আরবিট্রেশন কোর্ট ফর স্পোর্টস ১২ মাসের জন্য তাঁকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু তিনি শাস্তির মেয়াদের বিরুদ্ধে আপিল করে শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে ছয় মাসে নিয়ে আসেন। গত মাসেই তাঁর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
কিন্তু এই ৩৪ বছর বয়সী খেলোয়াড়ের শাস্তি কমিয়ে নেওয়া আপিলের বিরুদ্ধে আবার আপিল করে সিএএস। যার ফলে তাঁর শাস্তি বাড়িয়ে ১৪ মাস করা হয়। যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী জানুয়ারি মাসে। ফলে বিশ্বকাপে খেলা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল পেরুর ইতিহাসের সেরা গোলদাতার।
তবে নিজের এই দুঃসময়ে ৩৪ বছর বয়সী গুয়েরেরো পাশে পেয়েছেন অনেক ভক্ত-সমর্থককে। এমনকি প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়করাও তাঁর পক্ষে ফিফার কাছে আবেদন করেছেন। ফ্রান্স অধিনায়ক হুগো লরিস, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মেইল জেদিনাক ও ডেনমার্কের অধিনায়ক সাইমন কায়ের এই খারাপ সময়ে গুয়েরেরোর পাশে ছিলেন। তিন দেশের এই তিন তারকা ফিফার কাছে আবেদন করেছেন, যাতে গুয়েরেরোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে তাঁকে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়।
গুয়েরেরোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই পেরুর ফেডারেল কোর্ট গত ৩১ মে এই খেলোয়াড়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে ফেলে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর গত রোববার সৌদি আরবের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ৩-০ গোলে জয়লাভ করে পেরু। ওই ম্যাচে জোড়া গোল করে গুয়েরেরো জানান দেন, দলে তিনি কতটা অপরিহার্য। শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পেরুর মূল দলেও জায়গা করে নেন এই তারকা। এ মাসেই শুরু হওয়া বিশ্বকাপে দলের নেতৃত্বের ভার নিয়েই রাশিয়ার পথে উড়াল দেবেন গুয়েরেরো।
বিশ্বকাপে এবার পেরু খেলবে ‘সি’ গ্রুপে। অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও ফ্রান্সের মুখোমুখি হতে হবে লাতিন আমেরিকার দলটিকে।