আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় ঘোষণা কুকের
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের তারকা ক্রিকেটার অ্যালিস্টার কুক অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে ওভাল টেস্ট শেষেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান ইংল্যান্ডের পক্ষে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তবে এই বছরে নয়টি টেস্টে গড় মাত্র ১৮.৬২! তাই এই কঠিনতর সময় থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন তিনি।
তবে এই সিদ্ধান্ত মোটেও অবাক করার মতো কিছু না। সাউদাম্পটন টেস্টে কুককে সুস্থিত মনে হলেও দুই ইনিংসেই বাজেভাবে আউট হয়েছেন কুক। প্রথম ইনিংসে স্লিপে ক্যাচ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ড্রাইভে বল উঠে গিয়ে আউট হওয়ায় ক্রিকেটে তাঁর মনোযোগের ঘাটতি দেখেছে ভক্তরা। ২০১০ সালের পর থেকেই অ্যালিস্টার কুকের টেস্ট গড় ৪৫ এর নিচে নামতে থাকে।
তবে যাই হোক না কেন, ঝুলিতে কিছু অসাধারণ ক্রিকেটীয় মুহূর্ত নিয়ে যাবেন কুক। ২০০৬ সালে নাগপুর টেস্টে অভিষেকেই শতক হাঁকিয়েছিলেন ২১ বছর বয়সী কুক। ২০১০-১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০ বছর পর অ্যাশেজ জয়ের নায়ক হিসেবে পেয়েছিলেন সিরিজসেরার পুরস্কার। ২০১২ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে তিনটি শতকের ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। শচীন টেন্ডুলকারকে ছুঁতে না পারলেও তাঁর ৩২ টেস্ট শতকের ধারেকাছে নেই কোনো ইংলিশ খেলোয়াড়।
ক্যারিয়ারে উত্থান পতন এসেছে অনেকবার। তবে তাঁর চলে যাওয়ায় ভাবনায় পড়তে হবে নির্বাচকদের। তাঁর সহ-ওপেনার কিটন জেনিংসের জন্য নতুন কেউ আসবে নাকি তিন নম্বরে নতুন কেউ আসবে সেই ব্যাপারে ভাবতে হবে তাঁদের। ওভালের টেস্ট কুকের নিরবচ্ছিন্নভাবে ১৫৯তম খেলা টেস্ট হতে চলেছে, যা ক্রিকেট ইতিহাসের একটানা টেস্ট খেলার সর্বোচ্চ রেকর্ড। কাউকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করাটা কঠিনই হবে নির্বাচকদের জন্য।
কুক এখনই ক্রিকেটকে ছেড়ে দিচ্ছেন না। তিনি কিছুদিন এসেক্সের হয়ে খেলতে চান এবং ভবিষ্যতে কোচ হিসেবে কাজ করতে চান। কুক বলেন, ‘আমি আমার কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি কিছু পেয়েছি। এত দীর্ঘ সময় ধরে ইংলিশ কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার গর্বের ব্যাপার। বিগত কয়েক মাস ধরে চিন্তা করে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভারতের বিপক্ষে ওভাল টেস্টের পরেই আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাব।’ অ্যালিস্টার কুক মূলত ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাঁর স্থানে দেখতে চান। তিনি বলেন, ‘যদিও দিনটি কষ্টের, আমি হাসিমুখে বলতে পারি, আমি আমার সবটুকু দিয়েছি এবং আমার দেওয়ার আর কিছুই নেই। আমার দলের সঙ্গে একই ড্রেসিংরুমে আর না থাকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক কঠিন ছিল। কিন্তু, এটাই সঠিক সময়। আমি বাগানে খেলার বয়স থেকে ক্রিকেটকে ভালোবেসেছি এবং ইংল্যান্ডের জার্সিতে খেলার মর্ম কখনো ভুলব না। তাই এখন সময় নবীনদের সুযোগ দেওয়ার। তারা দেশের হয়ে খেলার সম্মান অর্জন করুক এবং আমাদের আনন্দিত করুক। আমি ইংল্যান্ড দলের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে অনেক আশা নিয়ে খেলা দেখব।’
এমন কষ্টের দিনেও বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলকে সিরিজে হারানো অবশ্যই তাঁকে খুশি করবে। তাঁর কষ্টের চেয়ে উদযাপন করার উপলক্ষ অনেক বেশি।