নাটকীয় জয়ে ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ
শুরুতেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে আফগানিস্তানকে বেশ চাপেই ফেলছিল বাংলাদেশ। অবশ্য বোলাররা সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে না পারায় শুরুর ধাক্কা সামলে বেশ এগিয়েও গিয়েছিল আফগানিস্তান। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সে ধারাবাহিকতায় জয়ের একেবারে কাছাকাছি চলেও যায় তারা। না, শেষ পর্যন্ত পারেনি টেস্ট ক্রিকেটে নবীন সদস্য দেশটি। নাটকীয়ভাবে ৩ রানে জয় তুলে নেয় লাল-সবুজের দল।
আজ রোববার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশের করা ২৪৯ রানের জবাবে আফগানিস্তানের ইনিংস থেমে যায় ২৪৬ রানে। অবশ্য গ্রুপ পর্বে এই বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ জয় পেয়েছিল আফগানরা।
এদিন দলীয় ২০ রানের মাথায় ইহসানুল্লাহ জানাতের (৮) উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় আফগানিস্তান। ছয় রানের ব্যবধানে রহমত শাহ (১) রান আউট হয়ে ফিরে গেলে কিছুটা বিপাকে পড়ে যায় দলটি।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ও হাশমতউল্লাহ ৬৩ রানের জুটি গড়ে এই বিপর্যয় কিছুটা সামলান। অবশ্য মাহমুদউল্লাহর শিকার হয়ে শেহজাদ (৫৩) হাফসেঞ্চুরি করেই সাজঘরে ফিরলে আবার কিছুটা চাপে পড়ে টেস্ট ক্রিকেটে নবীন সদস্য দলটি।
চতুর্থ উইকেটে শহিদী ও আসগর ৭৮ রানের জুটি গড়ে দলকে আবার স্বপ্ন দেখান। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আবার তাদের হতাশ হতে হয়ে শহিদী ৭১ রানের মাথায় মাশরাফি বিন মুর্তজার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আসগরও (৩৯) বাংলাদেশ অধিনায়কের শিকার হন।
তবে শেষ দিকে সামিউল্লাহ শানওয়ারী (২৩) ও মোহাম্মদ নাবি (৩৮) দারুণ দুটি ইনিংস খেলেও পারেনি দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে।
পেসার মুস্তাফিজুর রহমান শেষ ওভারে দারুণ বল করে দলকে নাটকীয় জয় এনে দেন। তিনি নিয়েছেন ৪৪ রানে দুই উইকেট। আর মাশরাফি ৬২ রান খরচায় দুই উইকেট পান।
এর আগে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৪৯ রান গড়ে। অবশ্য তাদের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। দলীয় দলীয় ১৬ রানের মাথায় ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর (৬) উইকেট হারিয়ে বসে। দুই রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেন ওয়ানডাউনে নামা মোহাম্মদ মিঠুনও (১)।
এরপর মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস তৃতীয় উইকেট জুটিতে কিছুটা দৃঢ়তা দেখান। দুজনে মিলে ৬৩ রানের জুটি গড়েন। পরে অবশ্য লিটন ৪১ এবং মুশফিক ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন। দ্রুত ফিরে যান সাকিব আল হাসানও (০)।
দলীয় ৮৭ রানের মাথায় পাঁচ উইকেট হারিয়ে দল যখন কিছুটা চাপে পড়ে তখন রুখে দাঁড়ান অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল কায়েস। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১২৮ রানের চমৎকার একটা জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখান তাঁরা।
মাহমুদউল্লাহ ৮১ বলে ৭৪ রানের চমৎকার একটি ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে গেলেও ইমরুল একপাশ আগলে রাখেন। তিন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে করেন ৭২ রান। অধিনায়ক মাশরাফি ৯ বলে ১০ রান করে আউডট হলেও মেহেদী হাসান মিরাজ চার বলে পাঁচ রানে ছিলেন অপরাজিত।
গতকাল হঠাৎ দলের সঙ্গে যোগ দেন ইমরুল। আজ একাদশে সুযোগ পেয়ে তা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন। মুমিনুল হকের জায়গায় নেওয়া হয়েছে তাঁকে।
এই ম্যাচের দল থেকে বাদ পড়েন পেসার রুবেল হোসেন। তাঁর জায়গায় নেওয়া হয়েছে স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুকে। ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয়েছে।
আফতাব আলম ৫৪ রানে তিনটি এবং রশিদ খান ৪৬ রান দিয়ে এক উইকেট নিয়েও বাংলাদেশের এই চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ার ক্ষেত্রে খুব একটা বাধা হতে পারেননি।