দুঃসময়ের কাণ্ডারি মাহমুদউল্লাহ
মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছিলেন, ‘একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে সব সময় ভালো খেলা সম্ভব নয়।’ তবে দুঃসময়ের কাণ্ডারি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দেখিয়েছেন, কীভাবে প্রয়োজনের সময় দলকে টেনে তোলা যায়। শুধু এশিয়া কাপে সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টিকে থাকার লড়াই নয়, এমন অনেক লড়াইয়ের যোদ্ধা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম শতক ও দ্বিতীয় শতক তাঁরই। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে অ্যাডিলেড ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশ। অন্যদিকে সেই বিশ্বকাপেই আরেক স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রানের আরেকটি ইনিংস খেলেন তিনি। তার পরে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। দলের হয়ে নিয়মিত খেলেছেন তিনি। সব সময় যে রান পেয়েছেন, তেমন নয়। তবে প্রয়োজনের সময় ঠিকই দলকে টেনে তোলেন এই ব্যাটসম্যান। গতকাল তিনি এমন এক সময় মাঠে নামেন, যখন ৮৭ রানে নেই বাংলাদেশের ৫ উইকেট! অথচ এই ম্যাচে হারলেই এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভেঙে যাবে টাইগারদের। সদ্য দলে ডাক পাওয়া আরেকজন ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস, যিনি সব সময় ওপেনিংয়ে খেলতে পছন্দ করেন, তাঁকে নিয়েই ১২৮ রানের বিশাল জুটি গড়েন তিনি, যা বাংলাদেশকে এনে দেয় ২৪৯ রানের লড়াকু সংগ্রহ।
সেই জুটিতে মাহমুদউল্লাহর অবদান গুরুত্বপূর্ণ ৭৪ রান। অন্যদিকে বল হাতেও নিজের কারিশমা দেখিয়েছেন তিনি। পাঁচ ওভার বল করে মাত্র ১৭ রান দিয়ে আফগানিস্তানের থিতু হয়ে যাওয়া ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদকে বোল্ড আউট করেছেন তিনি। নিজের প্রথম ওভারে এসেই ভয়ংকর হয়ে উঠতে থাকা হাশমতউল্লাহ শাহিদি ও শেহজাদের জুট ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। মাশরাফির বলে আফগানিস্তানের অধিনায়ক আসগার আফগানকে অসাধারণভাবে ক্যাচ আউট করেন তিনি। সব মিলিয়ে গতকালকের ম্যাচেও বাংলাদেশকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেওয়া এবং শেষ পর্যন্ত দলের জয়ে যতটুকু ভূমিকা রাখা যায়, তার সবই করেছেন সাবেক সহ-অধিনায়ক।
সামনে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই ফাইনালে পৌঁছবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচেও ভক্তরা এমন মাহমুদউল্লাহকেই মাঠে চাইবেন।