কেন এভাবে রানআউট সাকিব-মুশফিক?
সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিং ইনিংসের শুরু দেখে বিশ্বাসই হয়নি, এশিয়া কাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমেছে টাইগাররা। প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে স্কোরকার্ডে যখন মাত্র ১৮ রান জমা হয়েছে, তখনই নেই দুই তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুন। যখন উইকেট বিপর্যয় সামাল দিচ্ছিলেন লিটন দাস ও মুশফিক, তখনই ক্যাচ আউট হয়ে ফেরত যান লিটন। ১৯তম ওভারে আর দুই বল বাকি থাকতে মাঠে নেমে স্ট্রাইকে যান সাকিব। অথচ মাত্র দুই বল পরেই রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিব। অন্যদিকে ২১তম ওভারে সাকিবের মতো একইভাবে আউট হন মুশফিক। টিকে থাকার লড়াইয়ে এমন রানআউট দেখে ভক্তদের মনে অনেক প্রশ্ন উঁকি দিয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে ১৯তম ওভারে বল করছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার রশিদ খান। তৃতীয় বলে সুইপ শটে দারুণ একটি চার মারেন লিটন। তবে একই শটে পরের বলেই ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে গেছেন তিনি। তখন ক্রিজে নামেন সাকিব আল হাসান। যতক্ষণ মাঠে সাকিব ও মুশফিক থাকেন, ভক্তরা চিন্তা করেন, ভালো কিছু হওয়া সম্ভব। এশিয়া কাপে সুপার ফোরে এমন টিকে থাকার লড়াইয়ে অবশ্যই অনেক দায়িত্ব ছিল এই জুটির। একদিকে নেই ওপেনাররা, অন্যদিকে থিতু হতে পারছেন না কোনো ব্যাটসম্যানই। মাত্র দুই বলের মধ্যেই সব জল্পনা-কল্পনা মিথ্যা করে দিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। রশিদ খানের সেই ওভারের শেষ গুগলিকে মিড উইকেটে ঠেলে দিয়েই দৌড় দিলেন সাকিব। অথচ ফিল্ডারের হাতে বল পৌঁছে গেছে ততক্ষণে। মুশফিককে অপর প্রান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ফিরে আসার জন্য দৌড় শুরু করেন সাকিব। কিন্তু ততক্ষণে সরাসরি থ্রোতে স্ট্রাইকিং প্রান্তের উইকেট ভেঙে দিয়েছেন শেনওয়ারি। সাকিবের আউট দেখে মুশফিকের হতভম্ব হয়ে থাকার দৃশ্য অনেক দিন মনে রাখবেন ভক্তরা।
তবে একইভাবে নিজেকে এবং ছয়ে নামা ইমরুলকে হতাশ করেছেন মুশফিকও। রশিদ খানের পরের ওভারের পঞ্চম বল ছিল গুগলি। স্ট্রাইকে থাকা ইমরুল সেটি স্কয়ার লেগে ঠেলে দিলেন। বল যখন মোহাম্মদ নবির হাতে, তখনই নিজের ভুল বুঝতে পারেন মুশফিক। কারণ ততক্ষণে নন-স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে বের হয়ে অর্ধেক পথ চলে এসেছেন তিনিও। নিজের বাহু দিয়ে নন-স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে দেন রশিদ খান। ঠিক সাকিবের মতই ভক্তদের হতাশ করলেন মুশফিক।
এমন দৃশ্য দেখে হতাশ হয়েছেন মাশরাফিরাও। অন্তত এশিয়া কাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে এমন ভুল বোঝার কারণে রানআউট হওয়ার ঘটনা মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। প্রশ্ন উঠেছে দায়িত্ববোধ নিয়েও। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে আফগানদের বিপক্ষে শেষ ওভারের শেষ বলে নাটকীয়ভাবে ৩ রানে জয়। বাংলাদেশ গত ম্যাচে হারলে নিঃসন্দেহে প্রশ্নবিদ্ধ হতেন সাকিব ও মুশফিক। আরো বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হতেন যদি না মাহমুদউল্লাহ-ইমরুলের ১২৮ রানের জুটি বাংলাদেশকে ২৪৯ রানের সংগ্রহ না এনে দিতে পারত। পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের অঘোষিত সেমিফাইনালে অবশ্যই এমন ভুল হোক, তা ভক্তরা তো বটেই, সাকিব-মুশফিকও হয়তো চাইবেন না।