ক্রিকেট বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে মতামত
সেমিনারের বিষয় ‘তৃণমূলে আমাদের ক্রিকেট’। বাংলাদেশ ক্রীড়া সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন (বিএসজেএ) আয়োজিত একটি সেমিনারে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হলো শনিবার। আলোচনায় বক্তারা তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন।
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) হলরুমে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন, সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট এবং বিসিবির সহসভাপতি মাহবুব আনামসহ ১৩ জন বক্তা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেট উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদের কথায় অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট পরিচালনায় বিভিন্ন মহল থেকে হস্তক্ষেপ হয়ে থাকে। মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতনের কোচের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলেও মন্ত্রীর ফোন আসে। তা ছাড়া বিসিবি থেকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের পরও বিভাগীয় পর্যায়ের দলগুলোর কোচ ও ট্রেনারদের বেতন ঠিকভাবে দেওয়া হয় না। এসব কারণেই ক্রিকেট আজ যেখানে থাকার কথা, সেখানে নেই।’
আরেক সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ নিজের এলাকার ক্রিকেটের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আমার এলাকা রাজশাহীতে বেশ কয়েকটি মাঠ আছে। আছে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও। কিন্তু নেই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটের উন্নয়ন করতে হলে স্কুল ক্রিকেটের ওপর জোর দিতে হবে। প্রতিটি স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষককে লেভেল-২ কোচিং কোর্স করানো যেতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশের ক্রিকেট একাডেমিগুলোর ওপর বিসিবির নজরদারি আরো বাড়াতে হবে। তাহলেই তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটের উন্নয়ন সম্ভব।’
অনুষ্ঠানের শেষ বক্তা বিসিবির সহসভাপতি মাহবুব আনাম বলেন, ‘ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারলে আমাদের ক্রিকেটের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থাকে কার্যকর হিসেবে দেখে যেতে না পারলে সংগঠক হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ মনে করব।’
যাঁদের হাতে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার দায়িত্ব, তাঁরা তা ঠিকভাবে পালন করলেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন তিনি, ‘কেউ শুরু থেকেই কোনো কিছু শেখে না। বিসিবির দায়িত্ব আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কর্মকর্তাদের গড়ে তোলার। যাঁদের হাতে এই দায়িত্ব, তাঁরা ঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে সংকট অনেকাংশে কমে যাবে।’
ঢাকার বাইরের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে মাহবুব আনাম বলেন, ‘দেশের সবকটি জেলায় স্টেডিয়াম, ইনডোর ও জিমনেশিয়াম আছে। কিন্তু সেখানে হাউজি খেলা ও বিয়ের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। কখনো কখনো গরুও রাখা হয় সেখানে।’