দাপুটে জয়ে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ
লক্ষ্য বিশাল, ৪৪৩ রান। এই রান তাড়া করতে নেমে আগের দিন ৭৬ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। ম্যাচের পঞ্চম দিনে অবশ্য বেশ সতর্কভাবেই শুরু করে তারা। তবে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলর ছাড়া কোনো ব্যাটসম্যানই খুব একটা দৃঢ়তা দেখাতে না পারায় স্বাগতিকদের কাছে বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে তাদের।
আজ বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের পঞ্চম দিনে ২১৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের এই জয়ে সিরিজ ১-১ ব্যবধানে সমতায় শেষ হয়েছে। এরআগে সিলেটে প্রথম ম্যাচে ১৫১ রানে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৫২২ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে করে ৩০৪ রান। স্বাগতিকরা দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করলে প্রতিপক্ষের সামনে চার শতাধিক রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। কিন্তু অতিথি দলটির দ্বিতীয় ইনিংস ২২৪ রানে গুটিয়ে গেলে বড় জয় তুলে নেন মাহমুদউল্লাহরা।
অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের পক্ষে কিছুটা লড়াই করেছেন টেইলর। প্রথম ইনিংসের ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেন তিনি। অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন আসা যাওয়ায় ব্যস্ত তিনি ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত বল করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি ৩৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট পান। আর দুটি উইকেট পান তাইজুল।
এরআগে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ সংগ্রহ মাহমুদউল্লাহর। তিনি ১২২ বলে ১০১ রান করে অপরাজিত থাকেন। এটি তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। এর আগে ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। মেহেদী হাসান মিরাজও ৩৪ বলে ২৭ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন। এ ছাড়া অভিষিক্ত মিঠুন ৬৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
আর মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হকের সেঞ্চুরির ওপর ভর করে বাংলাদেশ ৫২২ রান করে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে, যাতে মুশফিক একাই ২১৯ রানের হার না মানা একটি ইনিংস খেলেন। ৪২১ বলে ১৮ চার ও একটি ছক্কায় এই ইনিংস সাজিয়েছেন। শেষ দিকে এসে তাঁকে দারুণ সাপোর্ট দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই তরুণ অলরাউন্ডার খেলেন অপরাজিত ৬৮ রানের একটি ইনিংস। এ ছাড়া মাহমুদউল্লাহ ৩৬ রান করেন।
মুশফিকের ক্যারিয়ারে এটি দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। এর আগে ২০১৩ সালে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের আরো দুটি ডাবল সেঞ্চুরি আছে, একটি সাকিব আল হাসানের, অন্যটি তামিম ইকবালের।
মুশফিক ও মুমিনুল মিলে দারুণ একটি রেকর্ড গড়েছেন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছেন। চতুর্থ উইকেটে তাঁরা করেন ২৬৬ রান। এই ভেন্যুতে এর আগে সর্বোচ্চ জুটি ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে। সেবার দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ইকবাল ও জুনায়েদ সিদ্দিকী করেছিলেন ২০০ রান। এবার সে রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছেন তাঁরা।
জবাবে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে গড়েছে ৩০৪ রান। তারা ১০৫.৩ ওভার খরচ করেছে। চোটের কারণে চাতারা ব্যাট করতে নামতে না পারায় ইনিংস গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় অতিথি দলটি। তাই প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের এই ইনিংস গড়তে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন ব্রেন্ডন টেইলর। তাঁর চমৎকার শতকেই (১১০) গড়া সম্ভব হয় তিন শতাধিক রান। এ ছাড়া পিটার মোর ৮৩ ও ব্রায়ান চারি ৫৩ দুটি চমৎকার ইনিংস খেলেন।
স্পিনার তাইজুল ১০৭ রানে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের শুরুতে বেশ চেপে ধরেছিলেন। মেহেদী হাসান মিরাজ তিন উইকেট তুলে নিয়ে শেষ বিকেলে কিছুটা চেপে ধরেন। আর একটি উইকেট পান আরিফুল হক।