‘বাসচালক’ ধোনি!

Looks like you've blocked notifications!

ভারতীয় ক্রিকেটের উত্থানের ইতিহাস কখনো লেখা হলে মহেন্দ্র সিং ধোনি চরিত্রটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়ে থাকবে। ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক জীবনযাপনও করেন বেশ সাধারণভাবে। এমনকি অনিল কুম্বলের অবসর গ্রহণের পর তিনি যেদিন প্রথম ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক হয়েছিলেন, সেদিনও নাকি নিজে বাস চালিয়ে দলকে হোটেলে নিয়ে এসেছিলেন ধোনি! অন্তত ভিভিএস লক্ষ্মণ তাঁর আত্মজীবনীমূলক ‘২৮১ এন্ড বেয়োন্ড’ বইটিতে এমন অনেক মজার তথ্যই তুলে ধরেছেন।

সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান লক্ষ্মণ যখন ২০০৮ সালে নিজের ব্যক্তিগত শততম টেস্ট খেলা শেষে হোটেলে দলের সঙ্গে ফিরছিলেন, তখন ধোনি নিজে বাস চালিয়ে হোটেলে নিয়ে এসেছিলেন সতীর্থদের। অনিল কুম্বলের অবসরের পরে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই অধিনায়কত্ব পাওয়ার পরও নাকি একই কাজ করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক।

আত্মজীবনী লিখতে গিয়ে বইটিতে লক্ষ্মণ উল্লেখ করেছেন, ‘ধোনির সঙ্গে আমার অন্যতম স্মৃতি হলো যখন নাগপুরে আমি শততম টেস্ট খেললাম, তখন ধোনি আমাদের বাস চালিয়ে হোটেলে পৌঁছে দিয়েছে। আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারিনি, দলের অধিনায়ক নাকি মাঠ থেকে হোটেলে বাস চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন! অনিলের অবসরের পর তাঁর অধিনায়কত্বে প্রথম টেস্টের সময় এমনটি হয়েছিল। কে কী ভাবল, সেটি সে চিন্তাও করে না। তবে সে সব সময়ই এমন সরল এবং মজার মানুষ। ধোনি কখনো এই আনন্দ বা মজা করার স্বভাবটি হারায়নি। আমি তাঁর মতো আর কাউকে দেখিনি।’

এমনকি দল ভালো না খেললেও ধোনি সব সময়েই শান্ত ছিলেন এবং কখনো হতাশ হয়ে পড়তেন না, এমনটিই উঠে এসেছে লক্ষ্মণের বইয়ে। ২০১১ সালের ইংল্যান্ড সিরিজের ঘটনা টেনে ধোনির শান্তমূর্তির প্রশংসা করেছেন লক্ষ্মণ। তিনি লিখেছেন, ‘ধোনির ধীরতা এবং স্থিরতা কিংবদন্তিতুল্য। ২০১১ সালের ইংল্যান্ড সফরের আগে সে সাফল্য ছাড়া আর কিছুই দেখেনি। তবে বছরের শেষ দিক আসতে আসতে আমরা ইংল্যান্ডের কাছে ৪-০ ব্যবধানে হেরেছিলাম এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছেও প্রথম তিন টেস্টে হেরে আরেকটি হোয়াইটওয়াশ হতে যাচ্ছিলাম। সবার মতো আমিও বাজে খেলেছিলাম। তবে ধোনি ধীরস্থির ছিল। সে একবারের জন্যও কড়া কথা বলেনি কিংবা সে হতাশায় বা অসহায়ত্বে ভুগছে এমন কোনো আচরণ দেখায়নি।’

কিছুদিন আগেই এশিয়া কাপের আসরে নিজের ২০০তম টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব পূর্ণ করেছেন ধোনি। নিয়মরক্ষার সেই ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভারত ড্র করায় সমালোচিত হয়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। তবে ভারতের অন্যতম সফল এই অধিনায়কের অজানা কিছু দিক তুলে এনেছেন লক্ষ্মণ। অধিনায়কের প্রভাব একজন খেলোয়াড়ের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, তারই উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন ধোনি।