জয়ের নায়ক যারা

Looks like you've blocked notifications!

চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৬৪ রানের দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। মুমিনুল হকের শতক, সাকিব আল হাসানের স্বরূপে ফিরে আসা, নাঈম-তাইজুল জুটি, নাঈমের অভিষেকেই পাঁচ উইকেটের চমক এবং শেষ ইনিংসে তাইজুলের ছয় উইকেট বেশ স্বস্তির জয় এনে দিয়েছে বাংলাদেশকে। দেশের মাটিতে ইন্ডিজদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে কারো একক নৈপুণ্যে নয়, দলীয় পারফরমেন্স করেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।

মুমিনুলের শতক

প্রথম ইনিংসে দারুণ শতক পেয়েছিলেন মুমিনুল হক। সৌম্য সরকার প্রথম দিকেই আউট হওয়ার পর ইমরুল কায়েসকে নিয়ে জুটি গড়েছিলেন তিনি। ছোট ছোট ইনিংস খেলে তাঁর সঙ্গে জুটি গড়ে অবদান রেখেছেন কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন ওকে সাকিব আল হাসান। ব্যক্তিগত ১২০ রানে আউট হন মুমিনুল। অবশ্য সাকিবকে উপযুক্ত সঙ্গ দিতে পারেননি মিস্টার ডিপেনডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম কিংবা সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

তাইজুল-নাঈম জুটি

দলীয় স্কোর যখন মাত্র ২৩৫, তখন ক্রিজে নেই সাকিব সহ সাতজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান। তবে সেই চাপ সামলেছে নিচের সারির ব্যাটসম্যানরা। তাইজুল ইসলাম এবং অভিষিক্ত নাঈম হাসানের ৬৫ রানের জুটি দলকে এনে দিয়েছিল ৩২৪ রানের বড় সংগ্রহ।

অভিষেকে নাঈমের চমক

অভিষেকেই স্পিনার নাঈম হাসান পেয়েছেন পাঁচ উইকেট। তাঁর অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যে বাংলাদেশ ইন্ডিজদের গুটিয়ে দিয়েছিল ২৪৬ রানে। অবশ্য তিনটি উইকেট পেয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অসাধারণ বোলিং করে ইন্ডিজদের চাপে রেখেছিল তাইজুল-মিরাজ। স্পিনাররা বাংলাদেশকে লিড এনে দিয়েছিল ৭৮ রানের।

নাঈম বল হাতে শুধু উজ্জ্বলতাই ছড়াননি, বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। অভিষেকে সবচেয়ে কম বয়সে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন তিনি। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট নাঈম। ১৭ বছর ৩৫৬ দিন বয়সে এই কীর্তি গড়েন তিনি।

এত দিন এই রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলীয় পেসার প্যাট কামিন্সের। ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৯ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর ১৯৩ দিন।

মাহমুদউল্লাহ-মিরাজের জুটি

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি। কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনে গড়েছিলেন ৩৭ রানের জুটি। বাংলাদেশের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩১ রান এসেছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। দলীয় স্কোর মাত্র ১২৫ হওয়ায় লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ২০৪ রানের।

তাইজুলের ছয় উইকেট

সফরকারীদের ব্যাট হাতে থিতু হতে দেননি বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাইজুল, মিরাজ ও সাকিবের বোলিং তোপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ১৩৯ রানে। ছয় উইকেট নিয়ে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন তাইজুল। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন সাকিব ও মিরাজ।

ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক পুরো বাংলাদেশ দলই।

সাকিবের কীর্তি

টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০ উইকেট এবং তিন হাজার রান নেওয়ার কীর্তি গড়েন সাকিব আল হাসান এই টেস্টে। চট্টগ্রাম জহুর আহমদে চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচের তৃতীয় দিনে কাইরান পাওয়েলকে সাজঘরে ফিরিয়ে এই অর্জন জমা করেন নিজের ঝুলিতে। তাই ইংলিশ কিংবদন্তি ইয়ান বোথামকে ছাড়িয়ে গেলেন এই বাংলাদেশি অলরাউন্ডার।

সাকিব ৫৪ টেস্ট খেলে তিন হাজার রান ও ২০০ উইকেট নিয়েছেন। আর বোথাম রেকর্ড গড়েছিলেন ৫৫ টেস্ট খেলে।