যেখানে ব্যতিক্রম মিঠুন-সাইফউদ্দিন

Looks like you've blocked notifications!

নিউজিল্যান্ড সফরটা বরাবরই কঠিন সময় উপহার দেয় বাংলাদেশকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সফরের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই কিউই পেসারদের বোলিং তোপে টালমাটাল হয়ে যায় বাংলাদেশের টপঅর্ডার। দলীয় ১৩১ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হয়ে গেলে অতি বড় টাইগারভক্তও ভাবেননি, দুইশ ছাড়াতে পারবে দল। কিন্তু তরুণ কাঁধে দলকে বিপদমুক্ত করার বিশাল দায়িত্ব তুলে নেন মোহাম্মদ মিঠুন ও সাইফউদ্দিন। সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী কন্ডিশন ও ভিন্ন উইকেটে ৮৪ রানের অনবদ্য এক জুটি গড়ে দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেন তরুণ দুই ক্রিকেটার।

মাত্র ৪২ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর রহিম আউট হলে ক্রিজে আসেন ডানহাতি মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান মিঠুন। এরপর একে একে আউট হতে দেখেন সৌম্য, মাহমুদুল্লাহ, সাব্বির রহমানকে। দলীয় ৯৪ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাব্বির আউট হলে মিরাজের সঙ্গে ৩৭ রানের জুটি গড়েন মিঠুন। কিন্তু দারুণ খেলতে থাকা মিরাজ মিচেল স্যান্টনারের বলে আউট হয়ে গেলে অল্প সময়ের মধ্যে ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়ে যায় দল। নয় নম্বরে নামা বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে এরপর প্রতিরোধ শুরু করেন খুলনার এই তরুণ।

কিউই পেসারদের বল আস্থার সঙ্গে সামলে এ দুজন অষ্টম উইকেট জুটিতে ১৫.৫ ওভার থেকে ৮৪ রান তোলেন। বড় শট না খেলে সিঙ্গেল-ডাবলের ওপর প্রাধান্য দিয়ে দুজন দলকে সম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে যান। ঠান্ডা মাথায় খেলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক তুলে নেন মিঠুন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে চমৎকার একটি ইনিংস খেলেন সাইফউদ্দিন। ৪৫তম ওভারে ফিফটির কাছাকাছি গিয়ে ৪১ রান করা সাইফউদ্দিন আউট হন স্যান্টনারের বলে। ৫৮ বলের ইনিংসে তিনটি বাউন্ডারি মারলেও লেট অর্ডারে নেমে দলের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন দারুণভাবে। ফাঁকা জায়গায় বল পাঠিয়ে মিঠুনের সঙ্গে নিয়মিত স্ট্রাইক পরিবর্তন করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। আর ৪৮তম ওভারে লকি ফার্গুসনের বলে আউট হওয়ার আগে দলীয় সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন মিঠুন। ৯০ বলের ইনিংসে পাঁচটি দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারি মারেন এই তরুণ। তবে দুজনের জুটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো, উইকেটে অভিজ্ঞ কেউ না থাকলেও দায়িত্ব শেষ মনে করে উইকেট বিলিয়ে না দিয়ে আসার প্রবণতা।

মাথা গরম না করে চোয়ালবদ্ধ লড়াইয়ে অসাধারণ এক জুটি গড়ে আজ দলকে উদ্ধার করেছেন দুই তরুণ ব্যাটসম্যান। পাশাপাশি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার জন্য নিজেদের দাবিটাও জোরালো করলেন মিঠুন ও সাইফউদ্দিন। এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ড সফরটাকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি মঞ্চ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। অভিজ্ঞদের ব্যর্থতার দিনে তাঁদের এমন দায়িত্বশীল ব্যাটিং স্বস্তি দেবে নির্বাচিতদেরও।