তারপরও ইনিংস ব্যবধানে হার বাংলাদেশের
প্রথম ইনিংসে খুব একটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ, ২৩৪ রানে ইনিংস গুটিয়ে নিয়েছিল। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহর দারুণ দুটি শতকের ওপর ভর করে বাংলাদেশ কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিল ঠিক, কিন্তু হার এড়াতে পারেনি। সফরকারীরা ইনিংস ও ৫২ রানে হেরে যায়।
আগের দিনের ১৭৪ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে আজ চতুর্থ দিনে ৪২৯ রান করে ইনিংস গুটিয়ে নেয় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ৭১৫ রান। তাই দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো প্রতিরোধ গড়ার পরও বড় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে মাহমুদউল্লাহদের।
তবে দারুণ কিছু প্রাপ্তি রয়েছে বাংলাদেশের। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন সৌম্য। ১৭১ বলে ১৪৯ রানের চমৎকার একটি ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি ওপেনার। আর মাহমুদউল্লাহ করেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি। মাহমুদউল্লাহ ২২৯ বলে ১৪৬ রান করেন।
ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেও চমৎকার খেলেছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়ে কিছুটা আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ৭৪ রান করেই সাজঘরে ফিরে যান এই বাঁহাতি ওপেনার। ৮৬ বল খেলেছেন, ১২টি চার ও একটি ছক্কার মার ছিল তাঁর এই ইনিংসে।
তবে তামিমের আউটটি ছিল দুর্ভাগ্যজনক। দলীয় ১৩০ রানের মাথায় ৩১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কিউই পেসার টিম সাউদির বাউন্সারের শিকার হন তিনি। বেশ গতির এই বলটি থেকে রক্ষা পেতে নুয়ে পড়েও রক্ষা পাননি, তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে বলটি গিয়ে জমা হয় উইকেটরক্ষকের হাতে।
নিউজিল্যান্ড ৭১৫ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। এটি দলীয় রানের রেকর্ড। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম ৭০০ রানের দেখা পেল কিউইরা। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৯০ রান ছিল আগের সর্বোচ্চ।
সেডন পার্কে কেন উইলিয়ামসনের অপরাজিত ২০০ রানের ওপর ভর করে এই বিশাল সংগ্রহ গড়ে নিউজিল্যান্ড। ২৫৭ বলের ইনিংসটি ১৯টি চার দিয়ে সাজিয়েছেন তিনি। এটি তাঁর ২০তম টেস্ট সেঞ্চুরি। এদিন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ৫৩ বলে অপরাজিত ৭৬, নেইল ওয়াগনার ৩৫ বলে ৪৭, বিজে ওয়াটলিং ৩১ ও নিকোলাস ৫১ রান করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন সৌম্য সরকার ও মেহেদী হাসান মিরাজ। একটি করে নিয়েছেন এবাদত হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ।
তিন সেঞ্চুরির এই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড আগের দিনের ৪৫১ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে এদিন আরো ২৬৪ রান যোগ করে। আগের দিনই রাভাল ১৩২ ও ল্যাথাম ১৬১ রান করে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখান।
আর বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৩৪ রান। কিউইদের ভয়ংকর পেস আক্রমণের বিপক্ষে শুধু তামিম ইকবালই ভালো খেলেছেন। ডি গ্র্যান্ডহোমের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ১২৮ বলে ১২৬ রানের চমৎকার একটি ইনিংস খেলেন তিনি। এটি তাঁর ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট শতক, যাতে ২১টি চার ও একটি ছক্কার মার রয়েছে।
তবে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি মুমিনুল হক (১২), মোহাম্মদ মিঠুন (৮) ও সৌম্য সরকার (১)। তিন ব্যাটসম্যান দ্রুত সাজঘরে ফিরলেও মাঝখানে কিছুটা বিপদে পড়ে সাফরকারী দল। ২২ রানের একটি ইনিংস খেলে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ আউট হয়ে যান। তবে পরে লিটস দাস দলকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখান। তিনিও ২৯ রান করে আউট হলে সংগ্রহটা খুব একটা বড় হয়নি বাংলাদেশের।
ট্রেন্ট বোল্ট ও নিল ওয়াগনারের বোলিং তোপে বাংলাদেশের এই বাজে অবস্থা হয়েছে। ওয়াগনার ৪৭ রানে ৫ উইকেট তুলে নেন। আর বোল্ট পান তিন উইকেট।