এবার ব্যাটিং সামর্থ্যের জানান দিতে চান মিরাজ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/03/31/photo-1554033255.jpg)
২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ দলে অভিষেক মেহেদী হাসান মিরাজের। একই বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদশি যুবাদের অধিনায়কত্ব করেন মিরাজ। ক্রিকেটাঙ্গনে জোর কথাবার্তা চলছিল, ওই বছর সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়াবেন খুলনার এই তরুণ। কিন্তু ইংল্যান্ডকে চমকে দেওয়ার জন্য তাঁকে কিছুটা আড়ালে রেখে দেয় বিসিবি। এরপরের ঘটনা ইতিহাস। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হয়ে প্রথমাবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের স্বাদ এনে দেন টাইগারদের। আর দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১৯টি উইকেট নিয়ে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেক সিরিজে ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হন মিরাজ।
দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটা জেতার পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে মিরাজকে নিয়ে দারুণ আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ দলের তদানীন্তন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। অসাধারণ বোলিংয়ের পাশাপাশি এই তরুণ তুর্কির দুর্দান্ত ব্যাটিং সামর্থ্যের উল্লেখ করে তাঁকে আগামীর ‘সাকিব আল হাসান’ অভিহিত করেন মুশফিক। কিন্তু স্বপ্নের মতো অভিষেক সিরিজটায় অফস্পিন বোলিংয়ের যে ভেল্কি জাদু দেখিয়েছেন মিরাজ, পরবর্তীতে সেটার আড়ালে চাপা পড়ে যায় তাঁর ব্যাটিং সামর্থ্য।
মিরাজ এখন পুরোদস্তুর বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছেন। অথচ, বয়সভিত্তিক দল ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে দারুণ কিছু ইনিংস খেলে মাঝেমধ্যেই নিজের ব্যাটিং ঝলক দেখিয়েছেন ২১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। কিছুদিন আগেই দুবাইতে ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপের স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনাল ম্যাচে লিটন দাসের সঙ্গে ওপেন করতে নামানো হয় তাঁকে। নিজে ৩২ রান করলেও লিটনের সঙ্গে ১২০ রানের জুটি গড়ে ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান দেন দুর্দান্তভাবে। ১৯ টি টেস্টে মাত্র দুটি ফিফটি তাঁর, সর্বোচ্চ রান অপরাজিত ৬৮। আর ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচে একটি মাত্র ফিফটি নিঃসন্দেহে তাঁর ব্যাটিং সামর্থ্যের পরিচায়ক নয়।
ভালো ব্যাটসম্যান হওয়ার সকল প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কেন সেভাবে হাসছেন তাঁর ব্যাট, আজ সেটার একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন মিরাজ নিজেই। মিরপুর একাডেমি মাঠে আবাহনীর হয়ে অনুশীলনের ডানহাতি অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিং অর্ডারের শেষদিকে নামায় আমার কাছ থেকে দলের আশাই থাকে মাত্র ২০-৩০ রান। স্কোরবোর্ডে এইটুকু যোগ করতে পারলে বা শেষদিকে ভালো একটা জুটি গড়তে পারলেই দলের অনেক সাহায্য হয়। ওই সময়টায় অনেক ভালো বোলাররা বোলিং করেন, অনেক বড় ইনিংস খেলার সুযোগ আমি পাব না। আপাতত এটা নিয়েই কাজ করছি আমি।’
সামনেই অগ্নিপরীক্ষা, ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল। সুযোগ পেলে বিশ্বকাপে দেশের হয়ে ব্যাটিংয়েও সর্বোচ্চটা উজাড় করে দিতে চান মিরাজ। ২০১৭ সালে ইংলিশ কন্ডিশনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে খেলার সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশ দলের। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডে সফরেও প্রায় একই ধরনের কন্ডিশনে খেলে এসেছেন। এবারও ভালো কিছুর বিষয়ে আশাবাদী মিরাজ বলেন, ‘ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন অনেকটাই একই। তাই আমাকে কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে সেটা নিউজিল্যান্ড সফর থেকেই অনেকটা বুঝে নিয়েছি। এই উপলব্ধি নিজের ব্যাটিংয়ে লাগাতে চাই এবার।’