হকির নির্বাচনে মডেল ফয়সাল
তাঁর পুরো নাম মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ অনেকেরই অজানা। তবে ফয়সাল বললেই নব্বই দশকের জনপ্রিয় মডেলের ছবিটা ভেসে ওঠে সবার মানসপটে। মডেলিং দিয়ে পরিচিতি পাওয়া সুদর্শন এই তারকা ছিলেন তাঁর সময়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মডেলদের একজন। রোমান্স ট্যালকম পাউডার, স্টার শিপ কনডেন্সড মিল্ক, কোকা-কোলা কিংবা গ্রামীণফোনের মডেল হিসেবে একসময় তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এই তারকা। পাশাপাশি অভিনয় করেছেন অল্প কয়েকটি নাটকেও। সম্প্রতি নতুন করে আলোচনায় এসেছেন ফয়সাল। তবে বিজ্ঞাপন বা অভিনয় দিয়ে নয়, আসন্ন হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়ে।
আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে হকি ফেডারেশনের নির্বাচন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সাজিদ-সাদেক ও সাঈদ-রশীদ নামের দুটি প্যানেল। আলোচিত এই নির্বাচনে সাজিদ-সাদেক পরিষদের হয়ে কার্যনির্বাহী সদস্যপদে লড়বেন ফয়সাল। তবে হকির সঙ্গে এই মডেলের সম্পর্ক হুট করেই হয়ে গেছে, ব্যাপারটা মোটেই এমন নয়। নিজে হকি খেলেছেন এবং হকির জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে সংগঠক হিসেবে কাজ করছেন তিনি। শৈশব থেকে হকির সঙ্গে জড়ানো আবেগ এবং খেলাটির উন্নয়নের চিন্তাভাবনা থেকেই নিকটজনদের উৎসাহে নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি।
মডেলিং থেকে ক্রীড়াজগৎ একেবারেই ভিন্ন। তবে অনেকেরই জানা নেই, ফয়সাল নিজেও পেশাদার হকি খেলেছেন। এমনকি মডেলিং ক্যারিয়ার শুরুর আগেই হকির মাঠে পদচারণা শুরু হয় তাঁর। সংবাদমাধ্যমকে ফয়সাল বলেন, “হকি আমার কাছে নেশার মতো। স্কুলজীবন থেকেই হকি খেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি। কম্বাইন্ড স্পোর্টিং ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, ঊষা ক্রীড়াচক্রের হয়ে টানা ১০ বছর হকি খেলেছি। সেই আবেগের জায়গা থেকে ২০১৫ সালে সাবেক হকি খেলোয়াড়দের নিয়ে ‘ভ্যাটেরান হকি বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছি আমরা। বর্তমানে আমি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।”
খেলাধুলা আর সাংগঠনিক কাজের ক্ষেত্রেও ফয়সালের অভিজ্ঞতা রয়েছে। একসময় ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন তিনি। খেলোয়াড় আর সংগঠক, আলাদা দুই ভূমিকায় পাওয়া অভিজ্ঞতা থেকেই হকির ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজের ভাবনাগুলো তুলে ধরেন তিনি। আবারও হকির সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব জানিয়ে বলেন, ‘একটা সময় এ দেশে জনপ্রিয়তায় ফুটবলের পরেই ছিল হকির অবস্থান। কিন্তু আমাদের হকির সেই স্বর্ণালি যুগ এখন আর নেই। তবে এই খেলাটির প্রতি আমার মতো সারা দেশে আরো অনেকের ভালোবাসা আছে, ভালোলাগা আছে। এগুলো সঙ্গে নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে আমি বিশ্বাস করি, হকির সুদিন আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমার নির্বাচনে অংশগ্রহণ।’
হকির সোনালি দিন ফেরানোর প্রত্যয়ে নির্বাচনে নামা জনপ্রিয় এই মডেল আলাদা কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চান না। তবে সাজিদ-সাদেক পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার পুরোপুরি অনুসরণ করতে ইচ্ছুক ফয়সাল। জানালেন, ইশতেহার পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলেই অনেকটা লক্ষ্য পূরণ হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, পদাধিকারবলে হকি ফেডারেশনের সভাপতি হন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান। ফেডারেশনের অন্য পদগুলোর জন্য নির্বাচন হয়। আগামীকাল মহিলা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ২৮টি পদের জন্য ভোটাভুটি করবেন মোট ৮৪ জন।