প্রথম এশিয়ান ক্রিকেটার হিসেবে সাঙ্গাকারার বিরল অর্জন

ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি), এটা সবারই জানা। কিন্তু খেলাটির আইন প্রণয়ন করে কারা, সেটা অনেকেরই জানা নেই। ১৭৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত ক্রিকেটের আইন-কানুন ঠিকঠাক করে আসছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন আইনও প্রবর্তন করছে এই ক্লাবটিই। ইংল্যান্ডের লর্ডসে অবস্থিত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (সংক্ষেপে এমসিসি) হচ্ছে ব্যাট-বল, রান আর আউটের এই খেলার আইন প্রণয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত সেই ক্লাব। আর প্রথম এশিয়ান হিসেবে এমসিসির প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটার কুমার সাঙ্গাকারা। শুধু প্রথম এশিয়ান নন, সংস্থাটির ইতিহাসে প্রথম ‘নন-বৃটিশ’ প্রেসিডেন্ট হয়ে বিরল সম্মানে ভূষিত হতে যাচ্ছেন এই লঙ্কান গ্রেট।
২০১২ সালে এমসিসির আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয় সাঙ্গাকারাকে। ক্লাবটির বৈশ্বিক ক্রিকেট কমিটিরও সদস্য তিনি। এবার আরেক ধাপ এগিয়ে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। গতকাল ১ মে লর্ডসে অনুষ্ঠিত এমসিসির বার্ষিক সাধারণ সভায় সাঙ্গাকারাকে প্রেসিডেন্ট করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ১ অক্টোবর থেকে ক্লাবটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব বুঝে নিবেন এই সাবেক ক্রিকেটার। এমসিসির নিয়ম ও প্রথা অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্বকাল থাকে এক বছর। ফলে আগামী ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সম্মানজনক এই দায়িত্ব পালন করবেন লঙ্কান এই তারকা ক্রিকেটার।
এমসিরির বর্তমান প্রেসিডেন্ট অ্যান্থনি রেফোর্ড শুক্রবার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কুমার সাঙ্গাকারার নাম ঘোষণা করেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে ১৩৪টি টেস্ট, ৪০৪টি ওয়ানডে এবং ৫৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন সাঙ্গাকারা। টেস্ট ইতিহাসের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান স্কোর করা সাঙ্গাকারার মোট টেস্ট রান ১২,৪০০। অন্যদিকে, ১৪,২৩৪ রান করে ওয়ানডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকার দুইয়ে আছেন তিনি। তাঁর সামনে আছেন কেবল ভারতীয় গ্রেট শচীন টেন্ডুলকার।
সম্মানজনক দায়িত্ব পেয়ে সাঙ্গাকারা জানিয়েছেন, এটা তাঁর জন্য অনেক বড় অর্জন। এমসিসির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে মুখিয়ে আছেন বলেও জানান তিনি। প্রাথমিক অনুভূতি জানিয়ে এই লঙ্কান কিংবদন্তি বলেন, ‘এমসিসির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়াটা বিশাল সম্মানের ব্যাপার। এ পদে কাজ করতে মুখিয়ে আছি আমি। আমার মতে, মাঠ ও মাঠের বাইরে ক্রিকেটের উন্নয়নে এমসিসি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট ক্লাব। ২০২০ সাল ক্রিকেটে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ একটা বছর হতে যাচ্ছে, বিশেষ করে লর্ডসে। এমসিসির প্রেসিডেন্ট হিসেবে এর অংশ হতে পারব ভেবেই আমি রোমাঞ্চিত।’
সাঙ্গাকারাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংস্থাটির বিদায়ী প্রেসিডেন্ট অ্যান্থনি রেফোর্ড বলেন, ‘এমসিসি যেহেতু এর বিস্তৃতি ও আন্তর্জাতিক সুখ্যাতি বাড়াতে চায়, তাই কুমার এই প্রস্তাব গ্রহণ করায় আমি উৎফুল্ল। সে এমসিসির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছে । মাঠে ও মাঠের বাইরে দারুণ এক ব্যক্তিত্ব সে, ক্লাবে ভালো অবদান রাখতে সক্ষম হবে। বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজের বছর হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদে তার ভূমিকাও হবে গুরুত্বপূর্ণ।’