হকিতে আশার আলো
কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল, হকিতে পালাবদল আসতে যাচ্ছে। সরে যেতে পারেন সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ। শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছে, পদত্যাগ করেছেন তিনি। শুক্রবার ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় রহমতউল্লাহ পদত্যাগ করার পর হকি অঙ্গনের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আব্দুস সাদেকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব।
আসলে রহমতউল্লাহ ও সাদেকের পদ অদলবদল হয়েছে। সহসভাপতির দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে সাদেক হয়েছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে রহমতউল্লাহ পদত্যাগের পর পেয়েছেন সহসভাপতির দায়িত্ব। তাই হকিতে দীর্ঘদিনের কোন্দল-রেষারেষির অবসান হয়েছে। এই পালাবদলকে স্বাগত জানিয়েছে ‘বিদ্রোহী’ চারটি ক্লাবও। তারা এখন খেলতে আগ্রহী।
হকির গঠনতন্ত্রের ১২(২) ধারা অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় শুধু দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পালাবদল হয়নি, ঠিক হয়েছে দলবদলের নতুন তারিখও। ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আগামী মৌসুমের দলবদল।
নতুন দায়িত্ব পেয়ে সাদেক ‘বিদ্রোহী’ ক্লাবগুলোকে দলবদলে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘পরিস্থিতির কারণে আমাকে এই পদে বসতে হয়েছে। যদিও বয়স ও শারীরিক কারণে এই দায়িত্ব নেওয়ার খুব একটা আগ্রহ ছিল না। কিন্তু হকির স্বার্থের কথা ভেবেই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছি। এখন সব ক্লাবের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, তারা যেন আমাকে সহযোগিতা করে, সবকিছু ভুলে দলবদলে অংশ নেয়।’
হকি ফেডারেশনের এই সিদ্ধান্তে খুব খুশি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড, মেরিনার ইয়াংস, ওয়ারী ক্লাব ও বাংলাদেশ স্পোর্টিং ক্লাব। রহমতউল্লাহর অধীনে প্রায় দুই বছর হকির সব ধরনের কার্যক্রম বয়কট করেছিল এই চার ‘বিদ্রোহী’ ক্লাব। তাই এ বছর দলবদল হয়নি। ফেডারেশন প্রিমিয়ার লিগও শুরু করতে পারেনি। যার প্রতিবাদে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা এসএ গেমসের ক্যাম্পে যোগ দেননি।
‘বিদ্রোহী’ ক্লাবগুলোর এখন আর দলবদলে অংশ নিতে আপত্তি নেই। মোহামেডানের পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, ‘আমরা এ ধরনের সিদ্ধান্তই চেয়েছিলাম। দলবদলে অংশ না নেওয়ার আর কোনো কারণ নেই আমাদের। ফেডারেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এখন হকির সব কার্যক্রমে অংশ নেব।’
রহমতউল্লাহও সংকট কেটে যাওয়ায় খুশি। সদ্যবিদায়ী সাধারণ সম্পাদকের কণ্ঠেই তা প্রতিধ্বনিত, ‘হকির স্বার্থেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হকির জন্য সর্বোচ্চ ছাড় দিতে আমি সবসময়ই প্রস্তুত। আশা করি হকি আগের মতো সুন্দরভাবে চলবে।’
এ ব্যাপারে আবাহনীর হকি কমিটির কর্মকর্তা শফিউল্লাহ দোলনের বক্তব্য, ‘আমরা কখনই বলিনি যে খেলব না বা দলবদলে অংশ নেব না। কিন্তু ফেডারেশনই দলবদল আয়োজন করতে পারেনি। আমরা চাই হকি সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে চলুক।’
অনেক দিন ধরে চলা হকির সমস্যার সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসানকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাঁরই উদ্যোগে ফেডারেশন ও প্রধান ক্লাবগুলোর কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন। আর তারপরই সংকট সমাধানের পথ বেরিয়ে এসেছে।