রঞ্জি ট্রফিতে গম্ভীর-তিওয়ারির ‘প্রায় হাতাহাতি’
ভারতের জাতীয় দলে দুজনেই সতীর্থ ছিলেন একসময়। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সেও একসঙ্গে খেলতেন গৌতম গম্ভীর ও মনোজ তিওয়ারি। কিন্তু ভারতের প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতা রঞ্জি ট্রফিতে দুজনে যে ‘কীর্তি’ গড়লেন, ক্রিকেট মাঠে তেমন দৃশ্য বিরল। কথাকাটাকাটি তো করেছেনই, প্রায় হাতাহাতি শুরু করে দিয়েছিলেন গম্ভীর-তিওয়ারি। আম্পায়ার হস্তক্ষেপ না করলে দুজনের মধ্যে এমনকি মারামারি বেধে যেতে পারত। অখেলোয়াড় আচরণের কারণে দিল্লি ও বাংলার অধিনায়ক গম্ভীর ও তিওয়ারিকে জরিমানার অঙ্ক গুনতে হচ্ছে।
শনিবার দিল্লির বিখ্যাত ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের খেলা চলার সময় তিওয়ারি ব্যাট করতে নামার পর লজ্জাজনক ঘটনাটির জন্ম। প্রথম ইনিংসে ১০৮ রানে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলা। এমন বিপর্যয়ের সময় ব্যাট করতে নামেন অধিনায়ক তিওয়ারি। তবে স্পিনার মনন শর্মার বিপক্ষে ‘গার্ড’ নেওয়ার আগেই টুপির বদলে হেলমেট নেওয়ার অনুরোধ করেন আম্পায়ারের কাছে। এ সময় ক্লোজ-ইন ফিল্ডাররা জোরে জোরে কথা বলে তিওয়ারিকে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করছিলেন। বাংলার অধিনায়ক এর প্রতিবাদ করেন আম্পায়ারের কাছে।
কিন্তু আম্পায়ার কিছু করার আগেই উল্টো তিওয়ারিকে উদ্দেশ করে কটূক্তি করেন এক ফিল্ডার। পাল্টা জবাব দেন তিওয়ারিও। তা শুনে প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো গম্ভীর ছুটে এসে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেন তিওয়ারির সঙ্গে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে দুই অধিনায়কের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়। আম্পায়ার কৃষ্ণরাজ শ্রীনাথ হস্তক্ষেপ না করলে হয়তো হাতাহাতিও বেঁধে যেত দুজনের মধ্যে। এমন অশোভন আচরণের কারণে গম্ভীরের ম্যাচ ফির ৭০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। আর তিওয়ারির কেটে নেওয়া হয়েছে ম্যাচ ফির ৪০ শতাংশ।
দিনের খেলা শেষে তিওয়ারি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, ‘আমি কিছুই করিনি। সবকিছু রেকর্ড করা আছে। আমি চুপচাপ ব্যাট করতে গিয়েছিলাম। তিনি (গম্ভীর) আমার সিনিয়র। দেশের জন্য তিনি যা করেছেন, সে জন্য আমি তাঁকে অনেক সম্মানও করি। কিন্তু সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো কিছু বলা হলে আমি তা মেনে নিতে পারি না।’
একসময় ভারতের অপরিহার্য ওপেনার, ৫৬টি টেস্ট ও ১৪৭টি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ গম্ভীরও সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন, ‘প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে পড়ার পর আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য মুখিয়ে ছিলাম। ম্যাচটা আমাদের নিয়ন্ত্রণেও চলে এসেছিল। আমরা মনোজকে ঘিরে ফিল্ডিং সাজিয়েছিলাম। কিন্তু সে পরবর্তী বল খেলার জন্য অনেক বেশি সময় নিচ্ছিল। আমাদের দলের একজন খেলোয়াড় তাকে বলেছিল, সময় নষ্ট না করার জন্য। কিন্তু তা না করে সে আমাদের কয়েকজন খেলোয়াড়ের উদ্দেশে বাজে কথা বলা শুরু করে। তখন আমি এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি আর কথাকাটাকাটি শুরু হয়। আম্পায়াররা ব্যাপারটা ভালোভাবে সামলেছেন আর বিষয়টির সমাপ্তি ঘটেছে।’
তবে গম্ভীর সমাপ্তি দেখলেও ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামের উত্তেজনা এত সহজে কমবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।