ফিফা সভাপতি লড়াইয়ে ম্যান্ডেলার সহযোদ্ধা
দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন টোকিও স্যাক্সওয়েল। সেজন্য দীর্ঘ ১৩ বছর জেলে কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রবাদপুরুষ ম্যান্ডেলার সঙ্গীকে এবার দেখা যাবে ফিফার সভাপতি নির্বাচনের দৌড়ে। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন স্যাক্সওয়েল।
১১১ বছরের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত আফ্রিকার কোনো প্রশাসককে দেখা যায়নি ফিফার সভাপতি পদে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে স্যাক্সওয়েল বিজয়ী হতে পারলে নতুন ইতিহাস রচিত হবে ফুটবল-বিশ্বে। দক্ষিণ আফ্রিকার ফুটবল ফেডারেশনও দাঁড়িয়েছে স্যাক্সওয়েলের পাশে।
ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, সভাপতি পদে প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে হলে অন্তত পাঁচটি দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সমর্থন প্রয়োজন। দক্ষিণ আফ্রিকা তো আছেই, পাশাপাশি জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সমর্থনও হয়তো পেয়ে যাবেন স্যাক্সওয়েল। জার্মানির কিংবদন্তি ফুটবলার ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের কথায় তেমনই ইঙ্গিত, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাঁকে সমর্থন করবে।’ দক্ষিণ আফ্রিকানদের যোগ্যতা-দক্ষতা নিয়ে যে তাঁর কোনো সংশয় নেই, সে কথাও দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন বেকেনবাওয়ার।
২০১০ বিশ্বকাপ আয়োজনের সময় সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিলেন স্যাক্সওয়েল। এরপর তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ফিফার বর্ণবাদ ও বৈষম্যবিরোধী কমিটিতে। বর্তমানে তিনি ফিফার গণমাধ্যম কমিটির একজন সদস্য। এ বছর ফুটবলের উন্নয়ন ও শান্তি স্থাপনের মিশন নিয়ে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলে দূত হিসেবেও কাজ করেছেন স্যাক্সওয়েল।
১৯৭৫ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরেছিলেন স্যাক্সওয়েল। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১৯৭৭ সালে ১৮ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন তিনি। রোবেন দ্বীপে ম্যান্ডেলার সঙ্গে জেল খেটেছিলেন স্যাক্সওয়েল। ১৯৯০ সালে ১৩ বছর কারাভোগের পর মুক্ত হয়ে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধে। ১৯৯৪ সালে ম্যান্ডেলা তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী প্রদেশ গটেংয়ের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
স্যাক্সওয়েল ছাড়া এখন পর্যন্ত ফিফার সভাপতি নির্বাচনের দৌড়ে আরো নাম লিখিয়েছেন উয়েফার বর্তমান সভাপতি মিশেল প্লাতিনি, জর্ডানের প্রিন্স আলী বিন আল হুসেইন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সাবেক অধিনায়ক ডেভিড নাহকিদ ও ফিফার সাবেক সহকারী মহাসচিব জেরোম শঁপ্যানিয়া।